চট্টগ্রামের বিএম কনটেইনার ডিপোর আগুন নেভাতে কুমিরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থেকে গিয়েছিলেন ১৫ কর্মী। তাদের মধ্যে অক্ষত আছেন শুধু একজন, ফায়ার ফাইটার রাকিব হাসান বাপ্পী। ঠিক বিস্ফোরণের সময় তিনি সেখানে না থাকায় বেঁচে যান।
বাকিদের মধ্যে বিস্ফোরণে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনার পর থেকে দুজন নিখোঁজ। আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন সাতজনের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পাঠানো হয়েছে ঢাকায়।
বাপ্পী বলেন, ‘জানি না জীবনে কী ভালো কাজ করেছি। আমার সঙ্গে সবাই হতাহত, শুধু আমি বেঁচে গেলাম। পানির স্পিড বাড়ানোর জন্য আমি পাম্পে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে এসে দেখি বিস্ফোরণে সবাই হতাহত।’
কুমিরা ফায়ার স্টেশনের লিডার আতিকুর রহমান সেদিন প্রশিক্ষণে ছিলেন। তার বদলে শনিবার রাতে বিএম কনটেইনারে ফায়ার ফাইটারদের নেতৃত্ব দেন সিনিয়র স্টেশন মাস্টার সুলতান মাহমুদ।
সুলতান এখন ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন।
আতিকুর বলেন, ‘সেদিন অন্য জায়গায় ট্রেনিংয়ে থাকায় আমি ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাই। নাহলে সিনিয়র স্টেশন মাস্টারের জায়গায় থাকতাম আমি। হয়তো আমার শরীরটাও ছিন্নভিন্ন হয়ে যেত।’
এর আগে দেশে আর কোনো দুর্ঘটনায় একসঙ্গে এত কর্মী হারায়নি ফায়ার সার্ভিস। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারীতে কনটেইনার ডিপোর বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ৯ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মীর মৃত্যু হয়েছে।
বাহিনীটির মৃত কর্মীদের কথা ভেবে স্থানীয় বাসিন্দা ফজলুল হক বলেন, ‘আগুন নেভাতে গিয়ে আগুনই এসব ফায়ার ফাইটারদের জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দিল।’
বিএম কনটেইনার ডিপোতে শনিবার রাত ৯টার দিকে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিস খবর পায় ৯টা ২৫ মিনিটে। রাত ১১টার দিকে শুরু হয় বিস্ফোরণ। কনটেইনারে থাকা হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের বিস্ফোরণে আগুন দ্রুত আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। বিস্ফোরণের শব্দে ভেঙে যায় আশপাশের বাড়িঘরের জানালার কাচ।
একে একে বের করা হয় হতাহতদের। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪১-এ। এখন পর্যন্ত হস্তান্তর করা হয়েছে ২১টি মরদেহ।