বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস আজ

  •    
  • ৭ জুন, ২০২২ ০০:২৫

পাকিস্তানি শাসন-শোষণ আর বঞ্চনা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে স্বৈরাচার আইয়ুব সরকারের বিরুদ্ধে ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে জাতীয় সম্মেলন হয়। তৎকালীন পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সব বিরোধী রাজনৈতিক দল নিয়ে ডাকা এই সম্মেলনে পূর্ব বাংলার জনগণের পক্ষে ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস, ৭ জুন আজ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় ও তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এ দিন বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফা আদায়ের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগের ডাকে হরতাল চলাকালে নিরস্ত্র জনতার ওপর পুলিশ ও তৎকালীন ইপিআর নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে মনু মিয়া, সফিক ও শামসুল হকসহ ১১ জন শহীদ হন।

শহীদের রক্তে ৬ দফা আন্দোলন অগ্নি-স্ফূলিঙ্গের মতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। রাজপথে নেমে আসে বাংলার মুক্তিকামী জনতা। ১৯৬৬ সালের এ দিনে বাংলার স্বাধিকার আন্দোলন স্পষ্টত নতুন মাত্রায় উন্নীত হয়।

পাকিস্তানি শাসন-শোষণ আর বঞ্চনা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে স্বৈরাচার আইয়ুব সরকারের বিরুদ্ধে ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে জাতীয় সম্মেলন হয়। তৎকালীন পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সব বিরোধী রাজনৈতিক দল নিয়ে ডাকা এই সম্মেলনে পূর্ব বাংলার জনগণের পক্ষে ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

সম্মেলন শেষে বঙ্গবন্ধু ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ফিরে ৬ দফার পক্ষে দেশব্যাপী প্রচারাভিযান শুরু করেন। বাংলার আনাচে-কানাচে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে জনগণের সামনে ৬ দফার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। বাংলার সর্বস্তরের জনগণ ৬ দফার প্রতি স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন জানায়। ৬ দফা হয়ে ওঠে পূর্ব বাংলার শোষিত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির সনদ।

৬ দফার প্রতি ব্যাপক জনসমর্থন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে সামরিক জান্তা আইয়ুব খানের স্বৈরাচারী সরকার ১৯৬৬ সালের ৮ মে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলার রাজপথ। সূচিত হয় গণআন্দোলন।

বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ৬ দফা আন্দোলন ১৯৬৬ সালের ৭ জুন নতুন মাত্রা পায়। গণআন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ৭ জুন হরতাল পালিত হয়। সেদিন নিরস্ত্র জনতার ওপর পুলিশ ও ইপিআরের নির্বিচার গুলিতে শহীদ হন ১১ জন। এরই ধারাবাহিকতায় ৭ জুন ছয় দফা দিবস হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়।

৬ দফা ভিত্তিক আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন রূপ নেয় স্বাধীনতা সংগ্রামে। ৬ দফা ভিত্তিক ১১ দফা আন্দোলনের পথপরিক্রমায় শুরু হয় ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান। সর্বোপরি ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বাংলার জনগণ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তথা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে একচেটিয়া রায় দেয়। কিন্তু নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভের পরও পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী সরকার গঠনে বাঙালি জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে গড়িমসি শুরু করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭১-এর ৭ মার্চ ঢাকায় রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) মহাসমাবেশে ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ডাক দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

প্রতিবছরের মতো এবারও দিনটি যথাযথ সন্মান ও শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করবে জাতি। ছয় দফা দিবস স্মরণে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শাসক দল আওয়ামী লীগসহ প্রগতিশীল অন্যান্য রাজনৈতিক দল দিনটি পালনে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আজ মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করবে। সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হবে। সকাল ১১টায় হবে আলোচনা সভা। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিতব্য এ সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দিয়ে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে দল ও সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৬ দফা দিবসের কর্মসূচি পালনের অনুরোধ জানিয়েছেন।

এ বিভাগের আরো খবর