মাগুরার শালিখায় স্বাস্থ্য বিভাগের সিলগালা করা আল-হেরা হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সময় মাদ্রাসাছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলা করেছে পরিবার।
শালিখা থানায় সোমবার বিকেলে মামলাটি করেছেন মৃত নির্জলা খাতুনের বাবা নাজমুল হোসেন।
আসামি করা হয়েছে আল-হেরা হাসপাতালের মালিক বাচ্চু মিয়া, তার স্ত্রী সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স কারিমুন্নেসা ও সনিয়া শারমিন নামে এক চিকিৎসককে।
শালিখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিশারুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সারা দেশে অবৈধ সব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশের পর ২৯ মে মাগুরায় অভিযান চালায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। সরকারি নিবন্ধন না থাকায় অভিযানে সিলগালা করে দেয়া হয় ২৭টি অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এর মধ্যে একটি শালিখা উপজেলার আড়পাড়া বাজারে অবস্থিত আল-হেরা প্রাইভেট হাসপাতাল।
শনিবার পেটের ব্যথা নিয়ে এই হাসপাতালেই ভর্তি করা হয় শালিখা উপজেলার পুকুরিয়া গ্রামের নাজমুল হোসেনের মেয়ে মাদ্রাসাছাত্রী ১৪ বছরের নির্জলা খাতুনকে। রোববার সকালে তার অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের পর জ্ঞান না ফেরায় তাকে যশোরে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নির্জলার চাচাতো ভাই মিরাজ মোল্লা বলেন, ‘শনিবার বিকেলে এই (আল-হেরা) হাসপাতালে নির্জলাকে ভর্তি করা হয়। রোববার সকাল ১০টায় অপারেশন শুরু হয়। সেখানে এক মহিলা ডাক্তার ছিলেন বলে জানি। আমার চাচার সঙ্গে ৫ হাজার টাকায় অপারেশনের কথা হয় হাসপাতালটির মালিক বাচ্চুর। সকালে অপারেশনের সময় আমরা বাচ্চুর স্ত্রী সিনিয়র নার্স কারিমুন্নেসাকে দেখতে পাই।
‘বেলা ১১টার দিকে আমার বোনের শরীর ঠান্ডা হতে থাকলে আমরা ওকে মাগুরা সদর হাসপাতালে নিতে চাই। ক্লিনিক মালিক বাচ্চু ও তার স্ত্রী বাধা দেন। একপর্যায়ে তারা ৪০ কিলোমিটার দূরে যশোরে নিতে বলেন। অথচ মাগুরার দূরত্ব ১৪ কিলোমিটার। যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক জানান নির্জলা মারা গেছে আগেই।’
এ ঘটনার পর পুনরায় হাসপাতালটিকে সিলগালা করে দেয় জেলার সিভিল সার্জন ও স্থানীয় প্রশাসন। একই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে হাসপাতাল মালিক বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী মাগুরা সরকারি সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স কারিমুন্নেসাকে আটক করে পুলিশ।
মাগুরা সিভিল সার্জন শহীদুল্লাহ দেওয়ান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ ঘটনায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’