গত বছরের ৩ আগস্ট বিয়ে করেছেন ফায়ার ফাইটার রংপুরের ফরিদুজ্জামান ফরিদ। বিয়ের বাকি আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে দিনক্ষণ ঠিক করা ছিল আসন্ন কোরবানির ঈদের পরদিন। কিন্তু সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর আগুন নেভাতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন তিনি।
ফরিদের পরিবার বলছে, আগুন নেভাতে যাওয়া ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের প্রথম ইউনিটে ছিলেন ফরিদ। সেই থেকে তিনি নিখোঁজ।
ফরিদের বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ইমাদপুর ইউনিয়নের আদারহার দক্ষিণ সরকারপাড়া গ্রামে।
তাকে জীবিত পাওয়ার আশাও ছেড়ে দিয়েছেন স্বজনরা। সোমবার দুপুরে তার বাবা সাইফুল ইসলাম ও মা ফুলমতি বেগম সীতাকুণ্ডে পৌঁছে ডিএনএ টেস্টের জন্য নমুনা দিয়েছেন।
তার চাচা তোতা মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ফরিদ এক মাস আগে বাড়িতে আসছে। কোরবানির ঈদে এসে বিয়ের অনুষ্ঠান করার কথা ছিল। আমাকে বলছিল, চাচা দোয়া করেন একবারে ঈদোত আসব। আমরা যতটুকু খোঁজ নিছি, তাতে ফরিদ আর বেঁচে নাই।’
ফরিদের চাচাতো ভাই মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে জানতে পারলাম বাড়ি থেকে যারা গেছে তারা ফরিদকে এখনও খুঁজে পায় নাই। সীতাকুণ্ডে পৌঁছে তারা ডিএনএ দিছে।’
ফরিদের স্ত্রী এশা মনির মামা আল আমিন বলেন, ‘গত বছরের ৩ আগস্ট ফরিদের সঙ্গে আমার ভাগনির বিয়ে হয়। কোরবানির ঈদে তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান করার কথা ছিল। তার আগেই তো সব শেষ হয়ে গেল। আমার ভাগনির দুই দিন ধরে জ্ঞান ফেরে না।
‘আমার তেমন কোনো চাওয়া নেই। এত বড় দুর্ঘটনা ঘটল, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে আসে; এটাই দাবি।’
ইমাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ফরিদের খোঁজ করছি। অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে, কেউ কোনো খোঁজ দিতে পারছেন না। পাঁচজন অলরেডি সীতাকুণ্ডে পৌঁছে গেছেন। ফরিদের কোনো খোঁজ মেলেনি।’
রংপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক ফরিদ আহাম্মদ চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বছর দুয়েক আগে সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে ফায়ার ফাইটার (সিপাহী) পদে যোগ দেন ফরিদুজ্জামান ফরিদ। বিষয়টি ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তর থেকে অনুসন্ধান করা হচ্ছে।’