বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মা জানেন না ছেলে বেঁচে নেই

  •    
  • ৫ জুন, ২০২২ ২২:৫৮

‘আল্লাহ আমাকে এ কোন পরীক্ষায় ফেলল। ও আল্লাহ তুমি আমার ছেলেকে সুস্থ করে দাও।’

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোয় আগুন লাগার ঘটনায় প্রাণ হারানো ফায়ার সার্ভিসের ৯ সদস্যের একজন সাকিল তরফদার। তার বাড়ি খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার সুরখালী ইউনিয়নের শুকদাড়া গ্রামে।

রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাকিলের গ্রামের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, তার মা জেসমিন বেগম উঠানে বসে কাঁদছেন। বাবা ছত্তার তরফদার মুখ গম্ভীর করে স্ত্রীর পাশে বসে আছেন।

সাকিলের ভাই রিপন তরফদার বলেন, ‘আমার চাচা ফায়ার সার্ভিসের হেড কোয়ার্টারের অ্যাকাউন্ট্যান্ট। তার নাম কামাল তরফদার। তিনি আজ বিকেল ৪টার দিকে ফোন করে আমাকে জানান, ছোট ভাই সাকিল মারা গেছে।

‘খবরটি পরিবারের অন্য সদস্যদের জানানো হলেও মাকে জানানো হয়নি। কারণ মা অসুস্থ। প্রতিদিন সাকিলের সঙ্গে কথা বলত। ছোট ছেলে হওয়ায় মা তাকে বেশি ভালোবাসত।’

রিপন জানান, মাকে বলা হয়েছে অগ্নিকাণ্ডে সাকিল আহত হয়েছে। তখন থেকে তসবিহ নিয়ে জিকির করেছে। দোয়া করছে সাকিলের সুস্থতার জন্য।

সাকিলের মা বলেন, ‘আমার ছেলে আমাকে কত ভালোবাসত। আমাকে বলত মা, তোমাকে হজ করাতে নিয়ে যাব। তুমি কারও সঙ্গে ঝগড়া করবা না।

‘আল্লাহ আমাকে এ কোন পরীক্ষায় ফেলল। ও আল্লাহ তুমি আমার ছেলেকে সুস্থ করে দাও।’

সাকিলের বাবা বলেন, ‘আমার অন্য দুই ছেলে তেমন আয় করতে পারে না। ছোট ছেলে আমাদের পরিবার চালায়। আজ এমন সংবাদ শুনলাম, যা আমি সহ্য করতে পারছি না।

‘গতকাল দুপুর ১২টার দিকে ছেলে আমাকে কল করেছিল। তখন শারীরিক অবস্থা জানতে চায়। পরে আর কথা হয়নি।’

মনিরুল নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘সাকিল কত ভালো ছেলে ছিল তা বলে বোঝাতে পারব না। বাড়িতে থাকলে আজানের পর সবার আগে সে মসজিদে যেত। নিয়মিত জামাতে নামাজ পড়ত।

‘সম্প্রতি আমাদের মসজিদে ছাদ ঢালাইয়ের জন্য সে ৪ হাজার টাকা দিতে চেয়েছিল। তার আগেই তার মৃত্যুর খবর শুনলাম।’

২০১৮ সালের জুনে খুলনার কমার্স কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থান ফায়ার সার্ভিসে চাকরি পান সাকিল। প্রথমে তিনি বটিয়াঘাটা ফায়ার স্টেশনে, পরে মোংলা ইপিজেডে ফায়ার স্টেশনে বদলি হন। সেখান থেকে ছয় মাস আগে তাকে চট্টগ্রামের কুমিরা ফায়ার স্টেশনের পাঠানো হয়।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোয় আগুন লাগার ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের ৯ সদস্য এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান।

ফায়ার সার্ভিসের গণমাধ্যম শাখা থেকে পাঠানো এক বার্তায় রোববার বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ফায়ার সার্ভিসের গুরুতর দুই কর্মীকে চট্টগ্রাম থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় আনা হচ্ছে।

সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপোয় শনিবার রাতে আগুন লাগে। আগুনে এখন পর্যন্ত ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও রয়েছেন।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত আলাউদ্দিন তালুকদার জানান, নিহতদের মধ্যে ২৫ জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। বাকিদের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

এ বিভাগের আরো খবর