চট্টগ্রামে বিএম ডিপোতে আগুন লাগে শনিবার রাত ৯টা ২৫ মিনিটে। রোববার সকাল সাড়ে ৭টায় তা ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণে এলেও রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত নেভেনি।
ডিপো এলাকায় রোববার রাতে নিউজবাংলার কথা হয় ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের সঙ্গে। তারা জানান, থেমে থেমে বাড়ছে-কমছে লেলিহান শিখা। যখন বাড়ে তখন আতঙ্কও বেড়ে যায়, আবার না বিস্ফোরণ হয়।
ঘটনাস্থল ঘুরে দেখা গেছে, ডিপোর দক্ষিণে এখনও পুড়ছে কন্টেইনার। দাহ্য পদার্থ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দূর থেকে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সন্ধ্যা থেকে উৎসুক জনতার ভিড় কমেছে। ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবীরা সেখানে কাজ করছেন নিরলস।
ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন সিকদার বলেন, ‘ক্যামিকেলের কন্টেইনারতো, তাই কাছে যাওয়া যাচ্ছে না। আমরা কন্টেইনার ভিজিয়ে ভিজিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছি। এটা বাজার হলে পানি মারলে নিভে যেত। কিন্তু যেহেতু দাহ্যপদার্থ, এটা নিভতে সময় লাগবে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। কত সময় লাগবে বলা যাচ্ছে না।
‘আগুন যখন দাহ্য বস্তু বেশি পায় তখন শিখা বাড়ে। দাহ্য বস্তু না থাকলে আগুন কম থাকত। কাল (সোমবার) সকালে আমরা ব্রিফ করে আপডেট জানাব।’
ফায়ার সার্ভিস জানায়, শনিবার রাত ৯টা ২৫ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় তারা। এরপর তাদের আটটি ইউনিট কাজ শুরু করে। কিছু পরে সেখানে যোগ দেয় আরও সাতটি ইউনিট। ভোরের দিকে আশপাশের জেলা থেকে পাঁচটিসহ ১০টি ইউনিট যোগ দেয়, তবে বিস্ফোরণ অব্যাহত থাকায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আশপাশে যেতে পারেননি দীর্ঘক্ষণ। এর সঙ্গে যোগ হয় পানির স্বল্পতা।
রাত ১১টার দিকে কনটেইনার বিস্ফোরণ শুরু হয়। এতে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, ডিপোটির কনটেইনারে থাকা রপ্তানির জন্য রাখা হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের কারণেই এমন বিস্ফোরণ ঘটেছে।
সবশেষ পাওয়া তথ্যে ঘটনাস্থলে আগুন নেভাতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমান ও সীতাকুণ্ডের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হোসেনের দেয়া সবশেষ তথ্যে, আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনায় ৪৫ প্রাণহানি হয়েছে। এর মধ্যে আছেন ফায়ার সার্ভিসের ৯ কর্মী।
এ ঘটনায় দগ্ধ ও আহত হয়ে চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শতাধিক।