ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকেন, সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, গত ১৩ বছরে নিজ দলের নেতাকর্মীরাও তার কাছে পৌঁছাতে পারেননি। এ কারণে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের আওয়াজ তুলতে হবে। অন্তত প্রদেশ হলেও মানুষ তার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দুঃখ-কষ্টের কথা বলতে পারত।’
যশোর সদরের লেবুতলা ইউনিয়নের লেবুতলা গ্রামে রোববার দুপুরে গণস্বাস্থ্য লেবুতলা হাসপাতালের জন্য নির্ধারিত স্থান পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বলেন, ‘বাংলাদেশের দারিদ্র্র্যতার অন্যতম কারণ স্বাস্থ্যব্যবস্থার নাজুক পরিস্থিতি। স্বাস্থ্যব্যবস্থা উন্নত না হলে দেশে দারিদ্র্য কমবে না।’
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘পৃথিবীর খুব কম দেশেই ইভিএম সিস্টেমে ভোট হয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইভিএম পদ্ধতি জনগণের বিশ্বাস ও আস্থার জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি। সাধারণ মানুষের ধারণা, তারা যে প্রতীকে ভোট দিক না কেন, তা নির্দিষ্ট একটি প্রতীকে গণনা হয়। তাই আগামী সংসদ নির্বাচন বিএনপিসহ সব দলের উপস্থিতি ছাড়া নির্বাচন করা সঠিক হবে না।’
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আগামীর পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য নিয়ে গণস্বাস্থ্য ব্যবসা করে না বলেই আমরা কম পয়সায় স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারছি। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য নিয়ে ব্যবসা করা যাবে না। যেমন ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করা যায় না।’
দেশের প্রায় দুই কোটি মানুষ খুবই অভাবের মধ্যে রয়েছে উল্লেখ করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে আগামী ঈদে তাদের কোনো আনন্দ থাকবে না। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র তার সীমিত সাধ্যের মধ্যে ২০ হাজার গরিব মানুষের মধ্যে চাল, ডাল, আটা, তেল, আলু ইত্যাদি সরবরাহ করবে।
‘প্রয়োজনের তুলনায় এটি খুবই সামান্য। সরকারের প্রতি আহ্বান, কম আয়ের দুই কোটি মানুষের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা হোক।’
ওই সময় ডা. জাফরুল্লাহর সঙ্গে ছিলেন নারীপক্ষের সদস্য শিরিন হক, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী মনজুর কাদের, লেবুতলা গ্রামের জমিদাতা মৃত শুভাংশু শেখর খাঁর স্ত্রী কল্পনা রানী খাঁ, মৃত অরুণ কুমার খাঁর স্ত্রী অরুণা রানী খাঁ।
শুভাংশু শেখর খাঁ ও তার ভাই অরুণ খাঁর পক্ষে তাদের স্ত্রীরা টিনশেড ঘরসহ ৫৫ শতক জমি হাসপাতালের অনুকূলে আজ রেজিস্ট্রি করে দেন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পক্ষে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী জমি গ্রহণ করেন।
আগামী জুলাইয়ে লেবুতলায় হাসপাতাল নির্মাণের কাজ শুরু হবে। আগামী বছরের জুন নাগাদ আনুষ্ঠানিকভাবে হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হবে।