পথহারা রাজনীতিবিদদের উসকানিতে মিরপুরে শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান।
রোববার রাজধানীর শ্রম ভবনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের আয়োজনে শ্রম অসন্তোষ নিরসনের লক্ষ্যে ত্রিপক্ষীয় সভা শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘মাহমুদুর রহমান মান্না, আ স ম আব্দুর রবদের মতো পথহারা রাজনীতিবিদদের উসকানিতে মিরপুরে শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় অবশ্যই রাজনৈতিক উসকানি রয়েছে।’
আগামী বছর মজুরি বোর্ড গঠন করা হবে বলে জানান শাজাহান খান। বলেন, ‘বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী তখন বেতন বাড়ানো হবে।’
সরকারের কাছে বা মালিকের কাছে লিখিত কোনো কিছু না দিয়ে হঠাৎ আন্দোলন এক ধরনের ‘হঠকারিতা’ বলে মনে করেন তিনি। শ্রমিকদের যাতে কেউ ব্যবহার না করতে পারে সেদিকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
মিরপুরে পোশাক শ্রমিকদের অসন্তোষের ঘটনায় শ্রমিক সংগঠনের সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করা হয় সভায়।
সভায় মালিকপক্ষের প্রতিনিধিরা চলমান আন্দোলনকে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসহ পোশাক শিল্পের অগ্রগতিকে ব্যাহত করার লক্ষ্যে একটি বৃহৎ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দাবি করেন। তবে শ্রমিকদের ন্যায়সংগত দাবি শ্রম আইন ও বিধি মোতাবেক প্রতিপালনে মালিকপক্ষ সর্বদাই সচেষ্ট বলে মত প্রকাশ করেন তারা।
সোমবার থেকে কারখানা যথারীতি খোলা থাকবে বলে শ্রমিক ও মালিকপক্ষের প্রতিনিধিরা সভায় জানান।
শাজাহান খান বলেন, ‘নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় অগ্রসর না হলে এই বিক্ষোভ কোনো সফলতা বয়ে আনবে না। ষড়যন্ত্রকারীরা বিএনপির হাত শক্তিশালী করে সরকারকে উৎখাত করতে চান। তারা চান এখানে গুলি চলুক, পরিস্থিতি ঘোলাটে হোক। কিন্তু শেখ হাসিনা শ্রমিকদের রক্ত চান না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা শ্রমিকদের ন্যায়সংগত দাবির পক্ষে আছি। আজ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বৈশ্বিকভাবে সব জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন শ্রমিকরা। আমরা শ্রমিকদের দাবি তাদের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরব।’
শ্রমিকদের মজুরি সংক্রান্ত বিষয়টি পূর্বনির্ধারিত সময়মতো সরকার ও মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি। শ্রমিকদের কাজে যোগ দেয়ার আহ্বানও জানান তিনি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (যুগ্ম সচিব) মিনা মাসুদ উজ্জামান। এ ছাড়া শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, শ্রমিক সংগঠনের নেতারাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের স্টেকহোল্ডাররা উপস্থিত ছিলেন।