সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোয় আগুন লাগার ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া দগ্ধ হয়েছেন অনেকে।
অগ্নিকাণ্ডের ৪৫ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। অলিউর রহমান নামে একজন ওই ভিডিওটি ফেসবুকে লাইভ সম্প্রচার করছিলেন। ভিডিওর ৪১ মিনিটে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ধরা পড়ে। তবে বিস্ফোরণের পর সবকিছু অন্ধকার হয়ে যায়। এ সময় শোনা যায় গোঙানির শব্দ।
২০ বছর বয়সী অলিউর বিএম কনটেইনার ডিপোয় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। তার গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায়।
রোববার অলিউরের মরদেহ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে অলিউরের চাচাতো ভাই জুনাব আলী বলেন, ‘লাইভ করার সময় আমরা তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু সে যায়নি। পরে লাইভে বিস্ফোরণের একটু পর থেকে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এখন তার মরদেহ হাসপাতালে পাওয়া গেছে।’
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছেন মাশফিরুল সিয়াম। বিএম কনটেইনার ডিপোয় শনিবার রাতে বিস্ফোরণের সময় আগুনের ভিডিও করছিলেন তিনি।
সিয়াম কাজ করেন ডিপোর ভেন্ডার বিভাগে। রোববার বিকেলে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি ৭০ ফুটের মতো দূরে ছিলাম ঘটনার সময়। ভিডিও করছিলাম। আমার সঙ্গে ছিল বন্ধু হৃদয় ও মিনহাজ। তারাও মোবাইলে আগুনের ভিডিও করছিলেন। কিন্তু হঠাৎ বিকট শব্দ হয়ে চারদিকে দেখি ধোঁয়া। তখন আমার মোবাইলও কোথায় পড়ে গেছে। আমিও পড়ে গেছি।’
ঘটনার পর মিনহাজ তার সঙ্গে একই ইউনিটে ভর্তি থাকলেও হৃদয় কোথায় আছেন জানেন না তিনি। তিনি বলেন, ‘আমি আল্লাহর দয়ায় বেশি পুড়ে না গেলেও মিনহাজ একটু বেশি পুড়েছে। আর হৃদয় কোথায় আছে জানি না এখন।’
দগ্ধ মিনহাজ বলেন, ‘তখন আমাদের সঙ্গে অনেকেই ভিডিও করছিল। সবাই পুড়েছে। কেউ তো আর জানত না বিস্ফোরণ হবে। তবে ওইখানে বাইরের লোক কম ছিল, ভেতরে যাদের কাজ শেষ হয়েছে তারা বেশি ছিল।’
শনিবার রাতে সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোয় আগুন থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ৪৩ জন নিহত ও দুই শতাধিক আহতের কথা নিশ্চিত করেছে পুলিশ।