চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোর আগুন ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণে আনার দাবি করলেও এখনও নেভেনি। তাই আগুন নেভাতে এবার ঢাকা থেকে আসছে বিদেশে উচ্চ প্রশিক্ষিত বিশেষ টিম।
এরই মধ্যে তারা চট্টগ্রামের পথে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন।
এ ছাড়া আগুনের ব্যাপ্তি ঠেকাতে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে যোগ দিয়েছে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার্স কোরের এক কোম্পানি ইউনিট।
রোববার সকাল ১০টার দিকে নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক। এর আগে তিনি অগ্নিকাণ্ডের এলাকাটি ঘুরে দেখেন। পাশাপাশি কর্মকৌশল নির্ধারণ করেন৷ তার পরিদর্শনের সময় ছয়টি বিস্ফোরণ হয় বলেও জানান তিনি৷
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ‘ঢাকা থেকে আমাদের বিশেষ টিম রওনা দিয়েছে। তারা বিদেশে উচ্চ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। আশা করি, তারা এসে আগুন নেভাতে সক্ষম হবেন। ‘আমাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর একটি টিমও যুক্ত হয়েছে। তবে রাসায়নিকের কারণে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের ১৮৩ জন সদস্য ২৫টি গাড়ির মাধ্যমে আগুনে নেভাতে রাত থেকেই নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।’
বিএম কন্টেইনার ডিপোতে আগুনের ঘটনায় উদ্ধার অভিযানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৫০ জন সদস্য যোগ দিয়েছেন। উদ্ধার অভিযান ও আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তার জন্য সেনাবাহিনীর একটি বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে। এ ছাড়া, সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ও নিরাপত্তা দলও নিয়োজিত রয়েছে সেখানে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ (আইএসপিআর) রোববার দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছে।
তারা জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর মিলিটারি পুলিশও সহায়তা করছে। বিস্ফোরণে আহতদের সেনাবাহিনীর মেডিক্যাল টিম শনিবার রাত থেকেই কাজ করছে। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল ও সিএমএইচ-এ স্থানাস্তরে সেনাবাহিনী অ্যাম্বুলেন্স সহায়তা করছে। এ পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ১৪ জন সদস্যসহ চট্টগ্রাম সিএমএইচে ১৫ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন মজুমদার রোববার সকালে নিউজবাংলাকে জানান, আগুনে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ কর্মীসহ কমপক্ষে ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগুনে দগ্ধ ও আহত হয়েছে শতাধিক মানুষ। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, শনিবার রাত ৯টা ২৫ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় তারা। এরপর তাদের আটটি ইউনিট কাজ শুরু করে। রাত ১১টার দিকে ডিপোতে কনটেইনার বিস্ফোরণ শুরু হয়। এতে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে। সকাল পর্যন্ত আগুন জ্বলতে থাকে।
কিছুক্ষণ পরে ঘটনাস্থলে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিসের আরও সাতটি ইউনিট। রোববার ভোরের দিকে আশপাশের জেলা থেকে পাঁচটিসহ ১০টি ইউনিট যোগ দেয়, তবে বিস্ফোরণ অব্যাহত থাকায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আশপাশে যেতে পারেননি দীর্ঘক্ষণ। এর সঙ্গে যোগ হয় পানির স্বল্পতা।