চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আগুন লাগে। সে খবর পেয়ে ছুটে যান সীতাকুণ্ডের কুমিরা ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা।
আগুনের খবর পেয়ে একে একে ছুটে আসে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট। রোববার সকাল পর্যন্ত আগুন নেভাতে আসা ইউনিটের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৫টিতে।
এর আগে রাতে কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থের কারণে দফায় দফায় বিস্ফোরণে বাড়ে আগুনের ভয়াবহতা। আগুনের তীব্রতার কারণে কাছেই যেতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ফুরিয়ে যায় রিজার্ভার গাড়ির পানি।
পাশের পুকুর থেকে শুরুর ঘণ্টা দুয়েক পানি মেলে। পরে সে উৎসও ফুরিয়ে যায়। এমন বাস্তবতায় নিরুপায় হয়ে পড়েন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক ফারুক হোসেন সিকদার শনিবার রাতে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাড়ে ৯টা থেকে আগুন জ্বলছে। এখনও আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছি, তবে আগুন নিভছে না। রাসায়নিক পদার্থের কারণে এমনটি হচ্ছে।
‘আমাদের রিজার্ভারের পানিও শেষ; পাশের একটা পুকুরের পানিও শেষ। গাড়িগুলো পানি আনতে পাঠানো হয়েছে। রাসায়নিক পদার্থ ও আগুনের তীব্রতার কারণে কাছে গিয়ে কাজ করা দুরূহ।’
কাছাকাছি সময়ে ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আনিসুর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, আগুন নেভাতে এসে বাহিনীর ২১ সদস্য আহত হন। এদের মধ্যে ১৪ জনের অবস্থা গুরুতর। তাদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানা পুলিশ রোববার সকালে যে ১৪ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে, তাদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের তিন কর্মী রয়েছেন।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল বিএম ডিপোর পাশেই নিউজবাংলার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নূর নওশাদের বাড়ি। বিস্ফোরণে তার বাড়িও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
রাতে তিনি জানান, এখনও আগুনের শিখা দেখা যাচ্ছে। ডিপোর পাশেই অনেক বাড়ির মানুষ বিস্ফোরণের ভয়ে নিরাপদে সরে গেছেন। সীতাকুণ্ডের মানুষ এমন ভয়াবহতা আগে কখনও দেখেনি।
আগুনের সবশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে রোববার সকালে ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক আনিসুর রহমান জানান, কনটেইনার ডিপোতে থেমে থেমে পানি দেয়া হচ্ছে। পানির সরবরাহ বেড়েছে। পাশের গ্রামগুলো থেকে পাইপের মাধ্যমে পানি আনা হচ্ছে।