চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার একটি কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুন লেগেছে। এতে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ কর্মীসহ কমপক্ষে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আগুনে দগ্ধ ও আহত হয়েছে দুই শতাধিক মানুষ। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন ইউনিটের সঙ্গে যোগ দিয়েছে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর থেকে আসা কয়েকটি ইউনিট। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক। তিনি কৌশল নির্ধারণে ফায়ার ফাইটারদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা রাফি আল ফারুক নিউজবাংলাকে জানান, আগুনে ফায়ার সার্ভিসের ৫ কর্মীসহ ১৫ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে।
আগুন ধরার কারণ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
এর আগে ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আনিসুর রহমান জানিয়েছিলেন, কনটেইনার ডিপোতে পানির উৎস না থাকায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে।
চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন মজুমদার রোববার সকালে নিউজবাংলাকে জানান, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৪ জনের মরদেহ আছে।
এর আগে মধ্যরাতে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল আলম আশেক বলেছিলেন, ‘এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ জরুরি বিভাগের সামনে রাখা হয়েছে।’
পরে ঘটনাস্থল থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। অন্যদিকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান আহত একজন।
আগুনের পর বিস্ফোরণ
ফায়ার সার্ভিস জানায়, শনিবার রাত ৯টা ২৫ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় তারা। এরপর তাদের আটটি ইউনিট কাজ শুরু করে। কিছু পরে সেখানে যোগ দেয় আরও সাতটি ইউনিট। ভোরের দিকে আশপাশের জেলা থেকে পাঁচটিসহ ১০টি ইউনিট যোগ দেয়, তবে বিস্ফোরণ অব্যাহত থাকায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আশপাশে যেতে পারেননি দীর্ঘক্ষণ। এর সঙ্গে যোগ হয় পানির স্বল্পতা।
রাত ১১টার দিকে ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপোতে কনটেইনার বিস্ফোরণ শুরু হয়। এতে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে। সকাল পর্যন্ত আগুন জ্বলতে দেখা যায় ডিপোতে।
ঘটনাস্থল থেকে নিউজবাংলার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি নূর নওশাদ জানান, বিস্ফোরণের বিকট শব্দে অনেক বাসাবাড়ির জানালার কাচ ভেঙে যায়। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। ভয়ে অনেকে মালামাল সরানোর চেষ্টা করেন।
ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আনিসুর রহমান শনিবার রাতে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগুন নিয়ন্ত্রণে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন স্টেশনের ইউনিট কাজ করছে।’
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ পর্যন্ত গুরুতর আহত অবস্থায় আমাদের অ্যাম্বুলেন্সে করে ৮ থেকে ১০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে।’