ঠাকুরগাঁওয়ে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীর গর্ভপাতের ঘটনা ঘটেছে। সে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল।
গত ১ জুন বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের মুন্সিরহাট এলাকার স্থানীয় এক দাইয়ের কাছে ওষুধ খাইয়ে ওই স্কুলছাত্রীর গর্ভপাত করানো হয়। ওই দিন বিকেলে এফিডেভিড করে বয়স বাড়িয়ে তাকে বিয়ে দেয়া হয় প্রেমিক সুয়েল রানার সঙ্গে।
রানা পেশায় রাজমিস্ত্রি। তিনি সদরের রায়পুর মোলানি ছেপড়িকুড়া গ্রামের বাসিন্দা।
ওই স্কুলছাত্রী শনিবার নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সে জানায়, দীর্ঘদিন ধরে রানার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তার। এর মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা হলে পরিবারের ভয়ে দীর্ঘদিন তা গোপন রাখে। পরে ছয় মাস হলে জানাজানি হয়। ঘটনার দিন ছেলেপক্ষের স্বজনরা তাকে গোপনে বাচ্চা নষ্ট করার জন্য নিয়ে আসেন মুন্সিরহাটের এক দাইয়ের কাছে। সেখানে ওষুধ খাইয়ে গর্ভপাত করা হয়। পরে আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
ওই ছাত্রী জানায়, এর মধ্যে পেটব্যথা বাড়লে ঠাকুরগাঁও শহরের চিকিৎসক জাহাঙ্গীরের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।
জাহাঙ্গীর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে পেটব্যথা নিয়ে আমার কাছে ওই স্কুলছাত্রীকে আনা হলে আমি আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট দেখে জানতে পারি, তার গর্ভপাত করা হয়েছে। ওই সময় তার বিয়ে ও স্বামীর কথা জিজ্ঞাসা করা হলে সে তথ্য গোপন করে। পরে শহরের ফ্রেন্ডস অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।’
ফ্রেন্ডস অ্যাপোলো হাসপাতালের ব্যবস্থাপক রিপন ইসলাম জানান, ‘ডাক্তারের কাছ থেকে এসে ওই রোগীকে ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। ওই রোগী অবিবাহিত ছিল এবং তার সঙ্গে থাকা কেউ কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে আমরা তাকে কোনো চিকিৎসা দিইনি এবং ভর্তি বাতিল করে ক্লিনিক থেকে বের করে দেয়া হয়।’
স্কুলছাত্রী জানায, এরপর রিকশায় করে আবার তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সদর হাসপাতালে। ওই সময় তার সঙ্গে চাচি ও রানার মা ছিল।
বিষয়টি জানাজানি হলে দুই পক্ষ সমঝোতা করে।
স্কুলছাত্রীর বাবা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঝামেলা না করে আমার মেয়ের সঙ্গে ওই ছেলের বিয়ে দেয়া হয়েছে। চিকিৎসা নিয়ে মেয়ে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এমন ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’