জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক ছাত্রের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে এক নার্সকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ছাত্রের নাম মামুনুর রশিদ। তিনি প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। ওশহীদ সালাম-বরকত হলের আবাসিক ছাত্র তিনি।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই নার্স।
কী বলা হয়েছে অভিযোগ পত্রে
ওই নার্স বলেন, ‘শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মামুনকে ইনজেকশন দেয়ার সময় আমার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। ওই সময় আমি চিৎকার করলে আমার সহকর্মীরা ডিউটিরুমে এসে উপস্থিত হয়। উক্ত ছাত্র তখন সরে দাঁড়ায়। এ ঘটনায় আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। আমার ওপর সংঘটিত এই যৌন হয়রানির সুষ্ঠু বিচার কামনা করছি।’
অভিযুক্ত মামুন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি ইনজেকশন নেয়ার সময় নার্সের গায়ে হাত দেই। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘এ ঘটনার লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ দ্রুতই বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন সেলে ফরওয়ার্ড করা হবে। সেল ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’
অভিযুক্ত মামুন মানসিকভাবে অসুস্থ বলে জানায় তার পরিবার।
মামুনের ভাগ্নে সবুজ আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মামুন মামার সঙ্গে পরিবারের সম্পর্ক ভালো না। তাকে ফোনে পাওয়া যায় না। মাঝে মাঝে ফোন দিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলতেন। ঈদেও বাড়িতে আসেনি।’
মামুনের রুমমেট নিউজবাংলাকে বলেনন, 'সে সারা দিন চুপচাপ থাকে। কোনো কথা বলে না। দরকার হলে বাইরে যায়, আবার চলে আসে। তার আচরণে অস্বাভাবিকতা ছিল। তার ব্যাপারে হলের সবাই জানতো।’
এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে চিকিৎসাকেন্দ্রে তালা ঝুলিয়ে অবরোধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ইউনিয়ন ও সমিতির সদস্যরা। ফলে প্রায় আড়াই ঘণ্টা চিকিৎসাকেন্দ্রের সেবাদান বন্ধ থাকে।
বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের আশ্বাসে ও রোগীদের সেবা নেয়ার কথা বিবেচনা করে তালা খুলে দেন তারা।
কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের সহকর্মী সেবা দানরত অবস্থায় ছাত্রনামধারী এক শিক্ষার্থীর দ্বারা নিপীড়নের শিকার হয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তের শাস্তির দাবি করছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রশাসন পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে, আমরা আন্দোলনে যাবো।’
কর্মচারীদের আলটিমেটামের বিষয়ে জাবির ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর বলেন, ‘বিষয়টা যেহেতু সেনসিটিভ, আমি আশা করছি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্মচারীদের বেঁধে দেয়া আলটিমেটামের পূর্বেই সিদ্ধান্ত নেবেন।’