সিলেটে আবারও বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাড়ছে নদ-নদীর পানি। দুদিন ধরে অব্যাহত রয়েছে বৃষ্টিও। উজান থেকে ঢলও নামতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ৫৫ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ ছাড়া শনিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৭ মিলিমিটার।
গত মে মাসেই ১৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয় সিলেটে। তলিয়ে যায় নগরের বেশির ভাগ এলাকাসহ ১২টি উপজেলা। পানিবন্দি হয়ে পড়ে জেলার প্রায় ১৫ লাখ মানুষ। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জনজীবন। ভেসে যায় খামারের মাছ, ভেঙে যায় সড়ক, বাঁধ, ঘরবাড়ি। সে বন্যার ধকল এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি সিলেটবাসী। এরই মধ্যে আবার দেখা দিয়েছে বন্যার শঙ্কা। এতে ভীত নিম্নাঞ্চলের মানুষেরা।
আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হওয়ায় ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এই বৃষ্টি আরও দুই থেকে তিন দিন স্থায়ী হবে। এরপর বর্ষার স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হবে।’
এদিকে আগামী ১০ জুনের পর থেকে ভারতের মেঘালয় ও আসামে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এতে করে সিলেটে নামতে পারে পাহাড়ি ঢল। এমনটা হলে সিলেট অঞ্চলে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয়।
গত দুদিনের বৃষ্টিতেই নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি বেড়েছে ৪ সেন্টিমিটার। কানাইঘাট পয়েন্টেও বেড়েছে এ নদীর পানি। এ ছাড়া কুশিয়ারা, লোভা, সারি নদীর পানিও বাড়ছে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ শনিবার দুপুরে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘১০ জুন থেকে শুরু হয়ে ১৪ জুন পর্যন্ত সিলেটের সীমান্তের ওপারের ভারতের মেঘালয় ও আসামে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এতে ঢল নামবে। ফলে সিলেট অঞ্চলে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। সে সময় বন্যা পরিস্থিতিও দেখা দিতে পারে।
‘সিলেটে যে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে তেমন কোনো সমস্যা হবে না। মূল চিন্তার কারণ পাহাড়ি ঢল,’ যোগ করেন তিনি।
পাউবোর এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এরই মধ্যে সিলেটে সম্প্রতি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো মেরামত ও সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে সেই মেরামতকাজ শেষ হবে।’
ইতোমধ্যে জকিগঞ্জ উপজেলার অমলশিদ এলাকায় সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর উৎসস্থলের নদী প্রতিরক্ষা বাঁধের মেরামত সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান তিনি।