নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে অন্যের জমি দখলে নেয়ার চেষ্টায় সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে। সেই নেত্রীর দাবি, তিনি খোরশেদ নামে একজনের কাছ থেকে জমিটি কিনেছেন। তবে কয়েক প্রজন্ম ধরে জমির মালিক অন্য একজন।
জমি যাদের দখলে, তারা আদালতেও গেছেন। শুনানি শেষে বিচারক জমির ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। মহিলা লীগ নেত্রী সেই আদেশও মানছেন না। দলবল নিয়ে এসে জমিতে থাকা সীমানাপ্রাচীর ভেঙে ফেলার চেষ্টা করছেন। বাধা দেয়ায় প্রতিপক্ষকে মারধর করেছেন, যাদের মধ্যে আছেন একজন নারী আইনজীবীও।
উপজেলার রূপগঞ্জ ইউনিয়নের জলসিড়ি আবাসনের বাড়িয়া সনি গ্রামে শুক্রবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
মহিলা লীগ নেত্রী হলেন লাকী আক্তার, যিনি রূপগঞ্জ ইউনিয়ন মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক।
নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ বলেন, ‘সেখানে জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। আমরা ঘটনাটি জেনেছি। সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মহিলা লীগ নেত্রী লাকী আক্তারের সমর্থকরা জমি দখলে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করেন। ছবি: নিউজবাংলা
মারধরের শিকার শাহানারা বেগম নামে ওই আইনজীবী নিউজবাংলাকে জানান, তার স্বামী ও তার দুই ভাই ওয়ারিশ সূত্রে ১১৬ শতাংশ সম্পত্তির মালিক। তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন দীর্ঘদিন ধরেই সেখানে বসবাস করে আসছেন।
সম্প্রতি প্রতিবেশী খোরশেদ মিয়াসহ কয়েকজন তাদের বাড়িটি দখল করতে চাইছেন। এ ঘটনায় আদালতে মামলাও করেছেন তিনি। আদালত সম্পত্তিতে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেয়।
কিন্তু আদালতের আদেশ না মেনে গত ২৯ মে বেলা ৪টার দিকে মহিলা লীগের নেত্রী লাকীসহ তার ১৫ থেকে ২০ সহযোগী লাঠিসোঁটা নিয়ে ওই জমির বাউন্ডারি ভেঙে ফেলেন। তারা বাধা দিতে গেলে প্রতিপক্ষ মারধর করে হুমকি দিয়ে চলে যায়।
শাহানারা বেগম বলেন, ‘এ ঘটনায় আমরা থানায় অভিযোগ করলে ৩১ মে সকালে আবার তারা বাউন্ডারি ভেঙে দেয়। আজ সকালে তারা সেখানে নতুন দেয়াল নির্মাণ শুরু করলে আমরা বাধা দিলে লাকীসহ তার লোকজন আমাকে ও আমার ভাশুরকে মারধর করেন। পরে ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ আসলে তারা চলে যায়।’
তিনি বলেন, ‘লাকী আক্তার বহিরাগত, তিনি এলাকার না। টাকার বিনিময়ে তিনি জমি দখল করিয়ে দিতে এসেছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাব দেখাচ্ছেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লাকী আক্তার বলেন, ‘আমি জমিটি কিনতে বায়না করেছিলাম। আমরা কারও ওপর হামলা করিনি, মারধরও করিনি। এর বেশি কিছু ফোনে বলতে চাই না।’
এ বিষয়ে জানতে রূপগঞ্জ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা গাজীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএস করলেও কোনো সাড়া দেননি।