আওয়ামী লীগের কাছে নির্বাচনি ইশতেহার ছাপা কোনো পুস্তিকা নয় জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘ইশতেহার মানে জনগণ ও ভোটারের সঙ্গে আওয়ামী লীগের একটি চুক্তি।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এই প্রতিশ্রুতি দিয়েই নির্বাচন করে, নির্বাচিত হলে দেশ পরিচালনায় প্রতিশ্রুতিগুলো পালনে সর্বাত্মক চেষ্টা চালায়।’
রাজশাহীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়’র প্রথম সমাবর্তনে বৃহস্পতিবার বিকেলে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
রাজশাহীর খড়খড়িতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবর্তনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন দেশের উপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা তৈরির কথা বলেছেন। দারিদ্র্য যেন কোনো মেধাবীর পথের বাধা না হয় সে বিষয়ে বলে গেছেন। কারিগরি শিক্ষা, বিজ্ঞানমনস্ক ও প্রযুক্তিবান্ধব জাতি এবং মানবিক মানুষ তৈরির বিষয়ে বলে গেছেন।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন আর প্রত্যন্ত অঞ্চল নেই। কম সময়ে আমরা প্রয়োজনের দোরগোরায় চলে যাই। ৭০-এর দশকে আমরা মাত্র সাড়ে ৭ কোটি মানুষ ছিলাম। সে তুলনায় আমাদের ফসলি জমি ছিল অনেক। সেই জমিতে প্রয়োজনীয় ফসল আমরা উৎপাদন করতে পারতাম না।
‘এখন জমির পরিমাণ কমে গেছে, জনসংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। এরপরও শতভাগ খাদ্য উৎপাদন করে উদ্বৃত্ত থাকছে। যেগুলো দিয়ে আমরা বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর পাশে দাঁড়াতে পারছি।’
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও রাজনীতিক, সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
তিনি বলেন, ‘আমাদের উন্নয়নের যে গতি, আশপাশের দেশে এই গতি নেই। কারণ ওই দেশগুলোতে উন্নয়নের সঙ্গে নারীরা পুরুষের মতো সমপর্যায়ে যুক্ত নয়। কিন্তু বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একেবারে তৃণমূল পর্যায় থেকে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছেন। এতে দেশের উন্নয়ন একটি নতুন মাত্রা পেয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে শুধু নারীর অধিকার নিয়ে কথা বললে হবে না। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমাদের এই উন্নয়ন মাত্র ১২ বছরের উন্নয়ন। মাত্র এক যুগে বঙ্গবন্ধুকন্যা বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে দিয়েছেন। আজকের রাজশাহী শহরকে দেশের অন্যতম সুন্দর শহরে পরিণত করেছেন।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলায় জেলায়, এমনকি উপজেলা পর্যায়ে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করে দিয়েছেন। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে শুধু শিক্ষা গ্রহণ নয়, মানসম্মত শিক্ষার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।
‘বর্তমান সরকার কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছে। কারিগরি শিক্ষার অনেক বেশি মূল্য রয়েছে। এর মাধ্যমে জনগোষ্ঠীকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করা যাবে। দক্ষ হলে বিদেশেও চাকরির অনেক সুযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সবাইকে গুরুত্ব দিতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর সাইদুর রহমান খান, মাগুরা ১ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ওসমান গণি তালুকদারসহ অনেকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনে প্রায় সাড়ে তিন হাজার গ্রাজুয়েট অংশ নেন।