দেশের সব জেলায় রেল পরিষেবা নিয়ে যেতে চায় সরকার। আর এর অংশ হিসেবে শরীয়তপুরেও রেললাইন করার কথা ভাবছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এখনও কোনো প্রকল্প নেয়া হয়নি। চলছে সম্ভাব্যতা যাচাই।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিকল্পনার বিভাগ জানিয়েছে, রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয় ইতোমধ্যে জাজিরা থেকে শরীয়তপুর পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার রেললাইন এবং জাজিরায় একটি রেলওয়ে জংশন নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। এ নিয়ে সম্প্রতি একটি বৈঠক করেছেন রেলওয়ে কর্মকর্তারা। সেখানে প্রকল্প ব্যয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বাংলাদেশের রেলওয়ের এক পরিকল্পনা কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শরীয়তপুরে রেললাইন করার বিষয়টি এখনও পরিকল্পনার পর্যায়ে রয়েছে। বিষয়টি এখনও মন্ত্রণালয়ে যায়নি।’
পদ্মা সেতুর দক্ষিণ অংশটি নেমেছে জাজিরা পয়েন্টে। এর সঙ্গে শরীয়তপুরকে যুক্ত করার পরিকল্পনা এখন বাংলাদেশ রেলওয়ের। তবে যেহেতু শরীয়তপুর নিচু এলাকা, এ কারণে এখানে রেলপথ নির্মাণের ব্যয়ের বিষয়টি বিবেচনা করছেন কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ রেলওয়ে জানাচ্ছে, শরীয়তপুরে সিঙ্গেল রেললাইন করা হলেও ডাবল লাইন করার মতো জমি নিয়ে রেলপথ করার পরিকল্পনা করা হবে। সে জন্য জমি পাওয়া যাবে কি না সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
২৫ জুন চালু হচ্ছে পদ্মা সেতু। এ সেতুতে রেল যুক্ত হবে। ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণের কাজ চলছে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে ঢাকা থেকে ভাঙা পর্যন্ত ট্রেন চলাচলের লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে কাজ করছে। এখন জাজিরা থেকে শরীয়তপুর পর্যন্ত রেল সংযোগ দেয়া যায় কি না তার সম্ভাব্যতা যাচাই করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে দেশের সব জেলাকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনার নির্দেশনা দিয়েছেন, যা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে ২০২০ সালে সংসদে জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
বাংলাদেশ রেলওয়ে জানিয়েছে, শরীয়তপুরে পরিকল্পিত রেল সংযোগ হতে পারে নদীর সমান্তরালে। কয়েকটি বিষয়ের যৌক্তিকতা খতিয়ে দেখে তারপরে রেল সংযোগ করতে চায় রেলওয়ে।
রেলের পরিকল্পনা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বর্তমানে এই সংযোগের জন্য ৪৬ জন পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করছেন। বিষয়টি আরও পরীক্ষা করে দেখা হবে। কারণ দেখা গেল রেল টাকা ব্যয় করে সংযোগটি দিল, কিন্তু এলাকার মানুষরা সেটা চাচ্ছে না। কারণ অনেকের কৃষিজমি আছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা এস এম সলিমুল্লাহ বাহার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শরীয়তপুরে রেল সংযোগের জন্য আমাদের পরিকল্পনা কমিটির একটি মিটিং হয়েছে। রেললাইন হবে কি না সে বিষয়টি স্টাডি করা হচ্ছে। সেই পর্যবেক্ষণের পর কোনো ফিডব্যাক এলে তা আমরা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করব। এরপর মন্ত্রণালয় যদি মনে করে তারা সন্তুষ্ট, তখন যাচাই-বাছাই কমিটিকে বলবে। এরপর আমরা আসল পরিকল্পনা করব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আসলে এখন সম্ভাব্যতা যাচাই করছি। তা না করলে বোঝা যাবে না যে ওখানে রেলপথ করা সম্ভব কি না। এই পদক্ষেপটি এখনও খুব প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং আরও সময় লাগবে।’