বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

খুন করে ১৬ ফুট বালুর নিচে চাপা, রহস্য উদ্ঘাটন পিবিআইয়ের

  •    
  • ২ জুন, ২০২২ ১৯:৪৮

অনুপ বাউলের স্বর্ণ ব্যবসার অংশীদার নয়ন মণ্ডল। তাদের দুজনের মধ্যে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধ ছিল। এ বিষয়কে কেন্দ্র করে অনুপকে খুন করার পরিকল্পনা করেন নয়ন। বিষয়টি নিয়ে তিনি কথা বলেন চাচাতো ভাই রিপন, পীযূষ ও দিলীপের সঙ্গে। তারা সবাই মিলেই খুনটি করেন: পিবিআই

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান এলাকার এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর মরদেহ বালুর ১৬ ফুট নিচ থেকে উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশের তদন্ত সংস্থা পিবিআই।

সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চলতি বছরের শুরুর দিকে সিরাজদিখানে নিজ বাড়ি থেকে মাদারীপুরে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন ব্যবসায়ী অনুপ বাউল। তার পরিবারের পক্ষ থেকে করা হয় অপহরণ মামলা।

এ ঘটনার তদন্ত করে পাঁচ মাস পর বালুর নিচে চাপা দেয়া অনুপ বাউলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আর খুনে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয় চারজনকে। এরা সবাই সম্পর্কে চাচাতো ভাই।

তদন্তে উঠে আসে, মাটি কাটার এক্সকাভেটর মেশিন দিয়ে ব্যবসার জন্য নয়ন মণ্ডল নামের এক ব্যক্তিকে ১০ লাখ টাকা ধার দেন অনুপ বাউল। এই লেনদেনে মধ্যস্থতা করেন আরেক ব্যবসায়ী রিপন মণ্ডল।

পিবিআই বলছে, পাওনা টাকা পরিশোধ নিয়ে নয়নের সঙ্গে অনুপের বিরোধ তৈরি হয়। এ বিষয়কে কেন্দ্র করেই অনুপকে হত্যার পরিকল্পনা করেন নয়ন।

পরিকল্পনার দুদিন পর রিপনহ চারজন অনুপকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে সেই এক্সকাভেটর দিয়েই বালু খুঁড়ে মরদেহ পুঁতে রাখেন রিপন।

এ ঘটনায় রিপন ও নয়ন ছাড়াও পীযূষ করাতি ও দিলীপ চদ্র রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ধানমন্ডিতে পিবিআই সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানান সংস্থাটির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার।

তিনি বলেন, গত ৪ জানুয়ারি নিখোঁজ হন অনুপ। পরদিন তার ছোট ভাই বিপ্লব বাউল সিরাজদিখান থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

বিষয়টি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় থানা পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব, ডিবি ও পিবিআই মুন্সীগঞ্জ জেলা তদন্ত শুরু করে। আর বিপ্লব বাউলকে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি অপহরণ মামলা করার পরামর্শ দেয় পিবিআই।

পরে বিপ্লব বাউল ৪ ফেব্রুয়ারি কেরানীগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করেন। থানা পুলিশের তদন্তে তিন মাসেও রহস্য উদ্ঘাটিত না হওয়ায় পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে গত ২১ এপ্রিল তদন্তভার পায় পিবিআইয়ের ঢাকা জেলা শাখা। দায়িত্ব পান এসআই (নি.) সালেহ ইমরান।

ইমরান প্রথমে রিপন এবং এক অটোচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। একপর্যায়ে পুরো বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। তারপর অনেকটা নিশ্চিত হয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তাদের দেয়া তথ্যমতে মরদেহ গুমের স্থান চিহ্নিত করা হয়। এরপর গতকাল বুধবার অনুপের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

আসামিরা প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে জানান, অনুপ বাউলের স্বর্ণ ব্যবসার অংশীদার নয়ন মণ্ডল। তাদের দুজনের মধ্যে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধ ছিল। এ বিষয়কে কেন্দ্র অনুপকে খুন করার পরিকল্পনা করেন নয়ন। বিষয়টি নিয়ে তিনি কথা বলেন চাচাতো ভাই রিপন, পীযূষ ও দিলীপের সঙ্গে। তারা সবাই মিলেই খুনটি করেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৪ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে অনুপকে পাওনা টাকা দেয়া এবং মাদারীপুরে স্বর্ণের অর্ডার পৌঁছে দেয়ার কথা বলে জয়েনপুরে ডেকে নিয়ে আসেন নয়ন।

জয়েনপুরে রিপনের গ্যারেজে আগে থেকে অপেক্ষায় ছিলেন রিপন, পীযূষ ও দিলীপ। সেখানে ঝগড়ার একপর্যায়ে চারজন মিলে অনুপকে গ্যারেজের খাটের মধ্যে ফেলে কাপড় দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।

এরপর মরদেহ একটি ড্রামে ভরে রাখা হয়। বেলা ৩টার দিকে অধীর নামে একজনের অটোয় করে আসামিরা ড্রামটি সিরাজনিখান থানার বোয়ালখালীতে বিসিক এলাকায় বালুর মাঠের কাছে নিয়ে যায়।

ড্রাম রেখে অটোচালক চলে গেলে আসামিরা ড্রামটিকে মাঠের ভেতর নিয়ে যান। তারপর কাদাযুক্ত একটি স্থানে লাশ পুঁতে ফেলে আসামিরা চলে যান। লাশ পুঁতে রাখার পর নয়ন তার প্রতিবেশী পিংকুর বাসায় গিয়ে গোসল করেন।

পিবিআই প্রধান বলেন, যেহেতু নয়নকে নিয়ে অনুপের মাদারীপুর যাওয়ার কথা ছিল, তাই অনুপের স্বজনরা নয়নকে জেরা করেন। সে সময় তিনি অনুপের সঙ্গে দেখা হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও নয়নকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি আবার সবকিছু অস্বীকার করেন।

এ বিভাগের আরো খবর