পুরান ঢাকার বাবুবাজারের বাদামতলীর চালের আড়তে ও নয়াবাজার ইউসুফ মার্কেটে খুচরা দোকানে চালের দামে অস্বাভাবিক ব্যবধান দেখতে পেয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
কোথাও কোথাও পাইকারির তুলনায় খুচরা বাজারে ১০ থেকে ১২ টাকার ব্যবধানও পাওয়া গেছে, যাকে অস্বাভাবিক বলেছেন দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফিফা খান।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানে খুচরা চালের বাজারে পাঁচটি দোকানকে ২৮ হাজার টাকা জরিমানার পাশাপাশি মামলা করা হয়।
নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যে দেশে বোরো ধান ওঠার পর চালের দামও বাড়তে শুরু করেছে। এবার আগাম বন্যায় হাওরে ও অতিবৃষ্টিতেও কিছু ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তবে সামগ্রিকভাবে উৎপাদনে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি বলে জানানো হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
পর্যাপ্ত উৎপাদন থাকার পরেও চালের দাম বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার থেকে বাজারে, গুদামে ও মিলে অভিযান শুরু করেছে সরকার।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির অভিযান শুরু হয় বাদামতলী মোড়সংলগ্ন খুচরা দোকানিতে। একটি দোকানের বিক্রেতা বলেন, পরিবহন খরচসহ চালের কেজিতে খরচ পড়েছে ৬১ টাকা। তিনি বিক্রি করছেন ৬২ টাকায়।
মেসার্স আফরা ট্রেডার্স রাইস নামে একটি দোকান থেকে দাবি করা হয়, তারা শেরপুর থেকে ৬৬ টাকায় চাল কিনে এনেছেন। শ্রমিক ও পরিবহন বাবদ যোগ হয়েছে আরও কিছু টাকা। আর বিক্রি করছেন ৭১ থেকে ৭২ টাকায়।
ম্যাজিস্ট্রেট আফিফা খান বলেন, ‘আজকে আমরা বাদামতলীর চালের আড়তে অভিযান করেছি। সেখানে শুধু একটি দোকানের ট্রেড লাইসেন্সে সমস্যা ছিল। বাকিগুলোতে পাইকারি যে নির্দিষ্ট দাম সেটি ঠিক আছে।
‘আমরা এখানে অবৈধ কোনো মজুত পাইনি। তবে পাশের খুচরা বাজারের চালের দোকানগুলোতে সমস্যা ছিল। পাইকারি আড়তে চালের দামের সঙ্গে এখানে খুচরা বাজারের মিল নেই। আমরা ঘুরে ঘুরে পাঁচটি দোকানকে মামলা ও জরিমানা করেছি।
‘দোকানিরা দাবি করছেন এক টাকা থেকে দুই টাকা লাভে চাল বিক্রি করছেন। দোকানিদের ভাষ্য মতে, খরচ মিটিয়ে তারা এ দামে চাল বিক্রি করছেন। তবে খুচরা বাজার ঘুরে অনেক দোকানে প্রায় ১০ থেকে ১২ টাকারও তারতম্য দেখা যাচ্ছে।’
দোকানিদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, চাল ব্যবসায়ীরা যেখান থেকে চাল ক্রয় করে আনছে, সেখানে পর্যাপ্ত চাল মজুত নেই, চাল তৈরি হয় নাই, চাল প্রস্তুত হয় নাই- এসব কথা বলছেন। মিল থেকে ধীরে ধীরে চাল ছাড়ায় বাজার অস্থির হয়ে উঠছে বলে তাদের ভাষ্য।
অভিযানে বিভিন্ন চালের আড়তে ট্রেড লাইসেন্স ও ফুড গ্রেইন লাইসেন্স পরীক্ষা করা হয়। দামের পাশাপাশি অবৈধ মজুত আছে কি না, সেটিও পরীক্ষা করা হয়।