বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাজেটে নদী খননে বরাদ্দ চান হাওরবাসী

  •    
  • ২ জুন, ২০২২ ১৬:১৮

পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী চলমান অস্থিরতায় সরকার স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে কৃষির ওপর জোর দিয়েছে। হাওরে উৎপাদিত ধান ও মাছ বিদেশে রপ্তানি করে আমরা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বাড়াতে পারি। একই সঙ্গে মজবুত করতে পারি আমাদের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির ভিত্তি। তাই এবারের বাজেটে হাওরের জন্য জুঁতসই পরিকল্পনা ও বরাদ্দ প্রয়োজন।’

প্রতি বছর অকালবন্যায় ফসলহানি থেকে স্থায়ীভাবে মুক্তি চান হাওরের মানুষ। তারা বলছেন, বছর বছর শত কোটি টাকার অবৈজ্ঞানিক হাওর রক্ষা বাঁধের প্রকল্প না নিয়ে নদী খননের মেগা প্রকল্প নিতে হবে। এ জন্য আসন্ন বাজেটে বরাদ্দ চান হাওরবাসী।

‘হাওরবাসীর বাজেট প্রত্যাশা’ শিরোনামে একটি অনুষ্ঠানে এমনটিই জানান হাওরপারের বাসিন্দারা।

সিলেটের জিন্দাবাজারের ইমজা মিলনায়তনে পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে হাওরের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মুনতাহা রাকিব এবং পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা। তারা প্রস্তাবিত বাজেটে হাওরের জন্য আলাদা একটি অধ্যায় সন্নিবেশন করারও দাবি জানান।

লিখিত প্রতিবেদনে তারা উল্লেখ করেন, দুই দফা বন্যায় এ বছর হাওরাঞ্চলে অন্তত ৫০ হাজার পরিবার ফসলহানির শিকার হয়েছে। এসব পরিবারের মানুষ সারা বছরের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন বোরো ফসল হারিয়ে দিশেহারা। হাওরের ফসল হারানো পরিবারগুলোকে ২০১৭ সালে বছরজুড়ে প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল ও ৫০০ টাকা করে দেয়া হয়।

এ বছরও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে বড় ধরনের সহযোগিতা করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে আগামী মৌসুমের জন্য তাদের বিনা মূল্যে সার ও বীজ দিতে হবে। এ জন্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দ থাকতে হবে।

হাওর এলাকার নদীগুলো এবং কিছু বিল খননের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদি ২০ হাজার কোটি টাকার একটি মেগা প্রকল্প প্রণয়নের দাবি জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এ খাতে আগামী বাজেটে অন্তত ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন।’

লিখিত প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, হাওর এলাকার উন্নয়নে সরকারের বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্প পরিকল্পনাধীন। কিন্তু এসব প্রকল্পের অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। এর মধ্যে সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ থেকে ধর্মপাশার পথে হাওরে উড়াল সেতু প্রকল্প, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প, সুনামগঞ্জে সীমান্ত সড়ক প্রকল্প, স্থায়ী ক্লোজার নির্মাণ প্রকল্প উল্লেখযোগ্য। এসব প্রকল্পের জন্য এবারের বাজেটে বরাদ্দ প্রয়োজন।

অন্যান্য দাবির মধ্যে ছিল দুর্যোগপ্রবণ হাওর এলাকার কৃষকদের জন্য শস্যবিমা চালু করা, ধান চাল সংরক্ষণের জন্য হাওরে পর্যাপ্ত পরিমাণে গোডাউন নির্মাণ, পরিকল্পিত ডেইরি ফার্ম ও হাঁস পালনের ওপর জোর দেয়া, হাওরের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বেশি করে বৃক্ষ রোপণ, বজ্রপাতে মৃত্যুর হার কমাতে বজ্র নিরোধক দণ্ড বসানো, গভীর হাওরে আশ্রয়ঘর তৈরি, হাওর এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ানো এবং ছাত্রছাত্রীদের চলাচলের জন্য আলাদা নৌকার ব্যবস্থা করা।

পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার পক্ষ থেকে বিলগুলোর লিজ মানি কমিয়ে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের বিল দখলে রাখার ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে জেলেদের স্বল্প সুদে বা বিনা সুদে ঋণ দেয়ার দাবি জানানো হয়।

পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী চলমান অস্থিরতায় সরকার স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে কৃষির ওপর জোর দিয়েছে। হাওরে উৎপাদিত ধান ও মাছ বিদেশে রপ্তানি করে আমরা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বাড়াতে পারি। একই সঙ্গে মজবুত করতে পারি আমাদের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির ভিত্তি। তাই এবারের বাজেটে হাওরের জন্য জুঁতসই পরিকল্পনা ও বরাদ্দ প্রয়োজন।’

এ অনুষ্ঠানে পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক পীযূষ পুরকায়স্থ টিটুও উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর