বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইউপি সচিবরা যে কাজে উৎকণ্ঠায়

  •    
  • ১ জুন, ২০২২ ২১:৫০

নবীগঞ্জের সব ইউনিয়নের সচিবদের সরকারি আইডির পাসওয়ার্ড রয়েছে ইউনিয়ন পর্যায়ে স্থাপন করা ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তাদের কাছে। মূলত তারাই সচিবের পক্ষে আইডি ব্যবহার করে জনগণকে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনসহ বিভিন্ন সেবা দিচ্ছেন।

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সচিবের সার্ভার আইডি ব্যবহার করে ঘরে বসেই জন্ম নিবন্ধনের কাজ করছেন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তারা। গোপন পাসওয়ার্ড অন্যের দখলে থাকায় উদ্বেগে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ইউপি সচিবরা।

ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তাদের দাবি, ইউপি সচিবদের কাজের চাপ কমাতে ও নানা বিষয়ে সহযোগিতার প্রয়োজনে পাসওয়ার্ড নেয়া হয়েছে। সচিবরাই তা দিয়েছেন।

তবে সচিবদের দাবি, স্বেচ্ছায় নয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মৌখিক নির্দেশে পাসওয়ার্ড দেয়া হয়েছে। আর তা নিয়ে সব সময় চিন্তায় থাকতে হয়। কোনো অঘটন হলে সচিবদেরই জবাব দিতে হবে।

ডিজিটাল সেবা দেয়ার এ পদ্ধতিতে বড় ধরনের ঝুঁকি আছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তবে সেবা গ্রহীতাদের চাপ সামাল দিতে এর বিকল্প খুঁজে পাচ্ছে না প্রশাসন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নবীগঞ্জের সব ইউনিয়নের সচিবদের সরকারি আইডির পাসওয়ার্ড রয়েছে ইউনিয়ন পর্যায়ে স্থাপন করা ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তাদের কাছে। মূলত তারাই সচিবের পক্ষে আইডি ব্যবহার করে জনগণকে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনসহ বিভিন্ন সেবা দিচ্ছেন। প্রায় ৬ মাস ধরে চলা এ প্রক্রিয়া নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। উদ্যোক্তারা শুধু ডিজিটাল সেন্টারে বসে নয় বাড়িতে গিয়েও করছেন, আর্থিক লেনদেন ও অনিয়ম করছেন বলেও অভিযোগ আছে।

সচিবদের আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহারের কথা স্বীকার করে দীঘলবাক ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টারের পরিচালক মনসুর আহমেদ বলেন, ‘ইউপি সচিবদের বিভিন্ন কাজ করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। বিশেষ করে জন্মসনদ তৈরির জন্য অনেক চাপ। এ কাজে সহযোগিতা করতেই আমরা সচিবদের আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করছি।’

পানিউমদা ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা মো. জুনায়েদ আহমেদ বলেন, ‘আমি সচিব সাহেবের আইডির পাসওয়ার্ড জানি না। কাজের প্রয়োজনে তিনি আমার কম্পিউটারে পাসওয়ার্ড দিলে কাজ করে দেই। দিনের বেলা আইডিতে প্রচুর চাপ থাকে, তখন রাতে বাড়িতে বসে কাজ করতে হয়।’

আউশকান্দি ইউনিয়নের উদ্যোক্তা ও জেলা উদ্যোক্তা সমিতির সভাপতি রনজিত সূত্রধর বলেন, ‘কাজের প্রয়োজনেই আমাদের সচিব সাহেবদের আইডি ব্যবহার করতে হয়। তবে এভাবে কাজে এখন পর্যন্ত সমস্যা হয়নি। উদ্যোক্তারা দায়িত্ব নিয়েই কাজগুলো করছেন।

‘জনগণের ভোগান্তি কমাতে আমাদের রাতদিন কাজ করতে হচ্ছে। এরপরও অভিযোগের সীমা নেই। সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে উদ্যোক্তারা সরকারি নির্ধারিত ফির চেয়ে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন, এমন তথ্য আমার জানা নেই।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইউপি সচিবদের কয়েকজন বলেন, ‘ডিজিটাল কেন্দ্রের উদ্যোক্তা সরকারি দায়িত্বে থাকা কেউ নন। তারা আমাদের আইডি ব্যবহার করে যদি অপরাধমূলক কাজ করেন, তাহলে দায় আমাদের ওপরই যাবে। এভাবে আইডি ব্যবহার ঠিক হচ্ছে না।

‘সচিবদের কাজে সহযোগিতা লাগলে তার জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে হিসাবরক্ষক কাম কম্পিউটার অপারেটর আছেন। তাদের আলাদা আইডি দিয়ে জন্ম-মৃত্যু সনদ তৈরির দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে।’

নবীগঞ্জের ইউএনও শেখ মহিউদ্দিন বলেন, ‘জনগনের সেবায় উদ্যোক্তারা প্রচুর শ্রম দেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরিতে তাদের ভূমিকা অপরিসীম। সচিবদের কাজের চাপ কমাতে তাদের কিছু দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। জনগণের কথা ভেবেই এ ব্যবস্থা।’

এ বিভাগের আরো খবর