চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে ইউনিয়ন সমাজকর্মীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এক সমাজসেবা কর্মকর্তাসহ চারজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার আবেদন করা হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আমলি আদালতের বিচারক হুমায়ন কবীরের আদালতে মঙ্গলবার দুপুরে আবেদনটি করেন মৃত শামীম হোসেনের বাবা মো. শামসুদ্দীন।
বাদী নিজেই নিউজবাংলাকে মামলার আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাদীর আইনজীবী আব্দুর রহমান বলেন, ‘জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আমলি আদালতের বিচারক হুমায়ন কবীর মামলার আবেদন গ্রহণ করেছেন। বুধবার এ বিষয়ে আদালত হয়তো একটা সিদ্ধান্ত দিতে পারে।’
অভিযুক্তরা হলেন সমাজসেবা কর্মকর্তা আল গালিব, অফিস সহকারী মো. মানিক, নাচোলের বাসিন্দা মিঠুন ও সাদিকুল ইসলাম।
নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু রহমান নিউজবাংলাকে জানান, গত ২৫ মে রাত সাড়ে ৯টার দিকে নাচোল উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের জানালার গ্রিলের সঙ্গে ফাঁস দেয়া অবস্থায় কার্যালয়ের ইউনিয়নকর্মী শামীম হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পরে অপমৃত্যুর মামলা হয়।
মামলার আবেদনে শামসুদ্দীন উল্লেখ করেছেন, বিভিন্ন প্রকল্পের ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে না দেয়ায় তার ছেলে শামীম হোসেনের সঙ্গে কর্মকর্তা আল গালিবের ঝামেলা চলছিল। অফিস সময়ের বাইরেও তার ছেলেকে দিয়ে কাজ করানো হত। ঝামেলার জেরে শামীমকে হত্যার হুমকিও দেন ওই কর্মকর্তা। এ নিয়ে বাড়িতে চাকুরি ছেড়ে দেয়ার কথাও বলেছিলেন শামিম।
তিনি বলেন, ‘আমার ছেলের পা মাটিতে লেগে ছিল, জানালার গ্রিলে কিভাবে সে আত্মহত্যা করে? এটা হত্যাকাণ্ড। অফিসের লোকজনই এটা করেছে।’
অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আল গালিব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মামলার আবেদনে স্বজনরা যে বিষয়গুলো এনেছেন, তারা এটা কেন বলছেন বুঝতে পারছি না। আমার অফিসের সব স্টাফের সঙ্গেই আমার খুব সুন্দর সম্পর্ক, শামীম সাহেবের সঙ্গেও একই রকম। কারও ওপর কোনও বিষয়ে জোর করব আমি এমন নয়।
‘প্রকল্পের যে বিষয়টি বলা হচ্ছে, সেটি কী করে হয়? আমার এখানে চলমান বড় কোনো প্রকল্পই নেই। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের একটি প্রকল্পের শুধুমাত্র ডাটা এন্ট্রির কাজ শেষ হয়েছে। কেন তারা এসব বলছে বুঝছি না।’
ওসি মিন্টু রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করছি। প্রতিবেদনে ভিন্ন কিছু পাওয়া গেলে অপমৃত্যু মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে।’