নাটোরের গুরুদাসপুরে ভ্যানচালক আব্দুর রহিম হত্যার ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ দাবি করেছে, এ হত্যার পরিকল্পনা হয়েছে মালয়েশিয়ায়। আর অর্থ লেনদেন ও স্ত্রীর বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের বিরোধে খুন করা হয় রহিমকে।
নাটোর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোহসীন মঙ্গলবার দুপুরে এক ব্রিফিংয়ে জানান, গুরুদাসপুরের নাজিরপুর এলাকায় একটি ভুট্টাক্ষেত থেকে ২৪ মে রাতে ভ্যানচালক আব্দুর রহিমের মরদেহ উদ্ধার হয়েছিল। এ হত্যার রহস্য উদঘাটন সম্ভব হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিনজনকে।
গ্রেপ্তার করা বিপ্লব হোসেন, হান্নান সরকার ও লিটন সরকারের বাড়ি নাটোরের গোপীনাথপুর এলাকায়। লিটনের বাবা মালয়েশিয়া প্রবাসী রায়হান সরকার এ হত্যার পরিকল্পনাকারী।
পুলিশ জানায়, মরদেহ উদ্ধারের পর প্রাথমিক তদন্তে রহিমকে শ্বাসরোধে হত্যার আলামত পাওয়া যায়। পুলিশের তিনটি বিশেষ টিম অনুসন্ধানের পর তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। মূলত স্ত্রীর বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে বিরোধ ও পাওনা টাকার জন্য খুন হতে হয় ভ্যানচালক রহিমকে।
পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোহসীন বলেন, ‘রহিমের স্ত্রীর সঙ্গে পাশের গ্রামের রায়হান সরকারের বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। এর মাঝে ২০১৭ সালে রায়হান জমি লিজ রেখে ২ লাখ টাকা নেন রহিমের কাছ থেকে। তারপর মালয়েশিয়া চলে যান রায়হান।
‘বারবার টাকা ফেরত চাইলে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করা রায়হান ক্ষিপ্ত হন। তিনিই রহিমকে হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে চার মাস আগে যোগাযোগ করেন চাচাতো ভাই হান্নান সরকারের সাথে। হত্যা পরিকল্পনায় যোগ করা হয় রায়হানের ছেলে লিটন সরকারকেও। রহিমকে হত্যায় হান্নান ও লিটন ১০ হাজার টাকার চুক্তিতে সাথে নেন এলাকার বিপ্লব হোসেনকে।’
আসামিদের বরাতে পুলিশ জানায়, ২৪ মে রাতে আব্দুর রহিমকে কৌশলে স্থানীয় একটি ভুট্টাক্ষেতে ডেকে নেয়া হয় সুন্দরী মেয়ের প্রলোভন দেখিয়ে। সেখানে হান্নান পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে রহিমকে ফেলে দিয়ে দুই পা চেপে ধরেন। আর বিপ্লব তার দুই হাত ধরে রাখেন। মোটরসাইকেলে ব্যবহার করা ‘ক্লাচের তার’ নিয়ে বিপ্লব গলায় প্যাঁচ দিয়ে রহিমের মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে রায়হানকে মোবাইলে কল দিয়ে হত্যার বিষয়টি বলা হয়।
মরদেহ উদ্ধারের পর রহিমের ভাই আব্দুর রহমান অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যায় অংশ নেয়া তিনজনকে চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করে।