ছাত্র সমাজের ঐক্যবদ্ধ ও দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে অচিরেই বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটানোর ঘোষণা দিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের প্রধান সমন্বয়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। এই লক্ষ্যে দেশের সব শ্রেণির মানুষদেরকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল-ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ-ডাকসুর সাবেক ভিপি মান্না।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় ডাকসুর সাবেক নেতাদের পক্ষ থেকে, যাতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নাগরিক ঐক্যের নেতা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তিন সাবেক ভিপি আ স ম আব্দুর রব, আমানউল্লাহ আমান ও নুরুল হক নূর, সাবেক জিএস খায়রুল কবির খোকন এবং সাবেক এজিএস নাজিমউদ্দিন আলম।
গত ২৪ এবং ২৬ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়। দুই পক্ষই লাঠিশোঠা, ইটপাটকেল নিয়ে পরস্পরের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় লিপ্ত হয়। তবে ছাত্রদল কর্মীরা পিটুনির শিকার হন।
মান্না বলেন, ‘দেশের ধ্বংসপ্রায় শিক্ষা ব্যবস্থা এবং শিক্ষাঙ্গনের নৈরাজ্যমূলক অবস্থার প্রেক্ষিতে আমরা ডাকসুর সাবেক নেতৃবৃন্দ আজকে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছি।’
তিনি বলেন, ‘অচিরেই ছাত্র সমাজের ঐক্যবদ্ধ দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে এই স্বৈরাচার, অবৈধ ভোট ডাকাত সরকারের হাত থেকে দেশকে, দেশের জনগণকে মুক্ত করে একটি মানবিক, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই আন্দোলনে আমরা সাবেক ডাকসু নেতৃবৃন্দ ছাত্র সমাজ তথা সকল আন্দোলনকারী শক্তির পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি।
‘আমরা ডাকসুর সাবেক নেতৃবৃন্দ দেশের সকল ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক, পেশাজীবী, ডাকসুসহ দেশের সকল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক-বর্তমান ছাত্র সংসদ নেতৃবৃন্দ, সাবেক-বর্তমান ছাত্র নেতৃবৃন্দ সহ দেশের সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশনায় ছাত্রদলের ওপর হামলা করেছে ছাত্রলীগ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নানা বক্তব্য ও পদক্ষেপে এটির প্রমাণ হয়েছে বলেও দাবি করা হয়।
মান্না বলেন, ‘এই হামলায় জড়িতদের নাম পরিচয়, হামলা এবং আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের ছবি, ভিডিও সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এমনকি ঘটনার বিষয়ে জানেন না বলেও মন্তব্য করেছেন উপাচার্য। প্রক্টর এই ঘটনায় হামলার শিকার ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলকে দায়ী করেছেন এমনকি মামলাও করেছেন।’
ওই ঘটনার পর ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের নামে মামলা হওয়াকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দায় বলেও মন্তব্য করেন মান্না।
তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রথমে এই হামলার ঘটনার সত্যতা নেই বলে মন্তব্য করেছিলেন। পরে তিনিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের মত ছাত্রদলকে দায়ী করেন এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেন।
‘যেখানে সারা দেশের মানুষ এই ঘটনার বিস্তারিত জানে, সংবাদ মাধ্যমে ছবি, ভিডিওসহ হামলাকারীদের নাম পরিচয় উঠে এসেছে, সেখানে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘটনার বিস্তারিত জানেন না।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্র লীগের সেই নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো হামলার শিকার ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকসহ ৪০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এর সম্পূর্ণ দায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। নিঃসন্দেহে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশেই ছাত্রলীগ এই তাণ্ডবলীলা চালিয়েছে।’