আশুলিয়ায় দেড় বছরের শিশু অপহরণের ৩ মাস পর অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৪। সেই সঙ্গে গাজীপুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ওই শিশুকে।
অপহরণকারীর নাম রাশেদুল ইসলাম। তার স্ত্রী কার সঙ্গে পালিয়ে গেছে তা জানতে স্ত্রীর সহকর্মী মীরা আক্তারের সন্তানকে অপহরণ করেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
সোমবার রাতে র্যাব-৪-এর একটি দল র্যাব-১৩-এর সহযোগিতায় রংপুর শহরের বিভিন্ন স্থানে সাঁড়াশি অভিযান চালায়। সেখান থেকেই গ্রেপ্তার করা হয় রাশেদুলকে।
তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার রতনপুর এলাকার একটি বাসা থেকে রোকসানা নামের এক নারীর হেফাজত থেকে দেড় বছরের শিশু আঁখিকে উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান র্যাব-৪-এর অধিনায়ক ডিআইজি মোজাম্মেল হক।
গত ৩১ মার্চ সকাল ১০টার দিকে আশুলিয়া থানার শিমুলিয়ার টেঙ্গুরী এলাকা থেকে শিশু আঁখিকে এক অজ্ঞাতপরিচয় যুবক অপহরণ করেন। শিশুটি টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ী থানার পাইক্কা গ্রামের সাদ্দাম হোসেনের মেয়ে। সাদ্দাম হোসেন পেশায় রাজমিস্ত্রি ও তার স্ত্রী মীরা আক্তার পোশাক শ্রমিক। তারা আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের টেঙ্গুরী এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন।
এজাহারে বলা হয়, অপহরণকারী অজ্ঞাতপরিচয় সেই যুবক ঘটনার কয়েক দিন আগে আলী হোসেনের বাড়িতে বাসা ভাড়া নিতে আসেন। তখন বাড়ির ম্যানেজার নেই বলে তিনি কথাবার্তা বলে চলে যান।
অপহরণকারী পরে আবার ভাড়া নিতে আসেন। সে সময় গেটের বাইরে খেলছিল আঁখি ও তার ৫ বছরের ভাই মীরাজ। অপহরণকারী মীরাজকে কিছু টাকা দিয়ে চকলেট কিনতে পাঠিয়ে আঁখিকে নিয়ে দ্রুত সটকে পড়েন।
ঘটনার পরদিন ১ এপ্রিল শিশু আঁখির বাবা বাদী হয়ে মামলা করেন।
ডিআইজি মোজাম্মেল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অপহরণকারী রাশেদুল দুই বছর ধরে আশুলিয়ার জিরানীবাজার কলেজ রোড এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি এবং বিবাহিত। অপহরণকারীর স্ত্রী নুরজাহান ও অপহৃত শিশুটির মা মীরা আক্তার আশুলিয়ায় একই কারখানায় চাকরি করতেন। তাদের দুজনের সুসম্পর্ক ছিল। একপর্যায়ে অপহরণকারীর স্ত্রী পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে তাদের ৭ বছরের শিশুসন্তানকে রেখে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যান।
তিনি জানান, ৭ বছরের শিশুটিকে নিয়ে আসামি রাশেদ বিপদে পড়েন। রাশেদের স্ত্রী কার সঙ্গে গেছেন এবং কোথায় আছেন তা মীরা আক্তার জানেন বলে সন্দেহ করেন রাশেদ। পরে মীরাকে অনেকবার জিজ্ঞাসা করলেও বলে না।
মোজাম্মেল হক বলেন, পরে তার স্ত্রীর অবস্থান জানতেই মীরার মেয়ে আঁখিকে অপহরণ করেন রাশেদুল।
একপর্যায়ে রাশেদুল শিশু আঁখির বাবা-মার কাছে ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। যার মধ্যে ২০ হাজার টাকা দেয়া হয় বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
পরে আঁখিকে রাশেদুল গাজীপুরের কালিয়াকৈরে তার এক ফুপু রোকসানার কাছে রেখে রংপুরে আত্মগোপন করেন।