গত ৯ মে নেদারল্যান্ডসে প্রশিক্ষণের জন্য যান শাহ আলম। এরপর দুই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়।
তিন-চার দিন আগে পরিবারকে জানানো হয়, তিনি পালিয়ে গেছেন। এরপর থেকে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন পরিবারের সদস্যরা।
নেদারল্যান্ডসে গিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) নিখোঁজ দুই সদস্যের একজন শাহ আলম। তার বাড়ি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বৈদ্দেরখীল গ্রামে।
শাহ আলমের বাবা মো. শাহজাহান রিকশাচালক আর মা শিরিনা বেগম গৃহিণী। বাড়িতে দুটি নড়বড়ে ঘর। একটিতে গরু রাখা হয়, অন্যটিতে থাকেন বাবা-মা। বড় বোন থাকেন শ্বশুরবাড়ি।
শাহজাহান বলেন, ‘আমার ছেলে বর্তমানে কোথায় আছে আমি তা জানি না। নেদারল্যান্ডসে যাওয়ার আগে বলে গেছে, প্রশিক্ষণের জন্য যাচ্ছে। মাঝে দুই-একবার কথা হয়েছিল। তিন-চার দিন আগে বাড়িতে পুলিশ এসে শাহ আলমের খোঁজ করলে জানাই, সে নেদারল্যান্ডসে গেছে।
‘তারাই বলে, আমার ছেলে সেখান থেকে পালিয়ে গেছে। এরপর থেকে প্রশাসন আমাদের ওপর কড়া নজরদারি করছে। বারবার থানায় ডেকে নিচ্ছে। আমাদের মোবাইল ফোনও রেখে দিয়েছে।’
মা শিরিনা বেগম বলেন, ‘পুলিশ বলছে, আমার ছেলে নাকি পালিয়ে গেছে। সে কোথায় আছে, কীভাবে আছে আমরা কিছুই জানি না।’
ডগ স্কোয়াডের প্রশিক্ষণ নিতে সহকারী পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেনের নেতৃত্বে সিএমপির আট সদস্যের দল যায় নেদারল্যান্ডসে। দলের বাকিদের মধ্যে ছিলেন একজন এসআই (সশস্ত্র), একজন নায়েক এবং পাঁচজন কনস্টেবল।
২৪ মে ছয়জন দেশে ফিরে এলেও শাহ আলম ও কক্সবাজারের রাসেল চন্দ্র দে ফেরেননি।
রাসেলের বোন কমলা পাল জানান, ২৬ মে রাসেল তার দুবাইপ্রবাসী ভাই সুভাষ চন্দ্রকে ফোনে জানিয়েছেন, তার পুলিশের চাকরি ভালো লাগে না। তাই নেদারল্যান্ডসে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
শাহ আলমের বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, ‘মৌখিকভাবে শাহ আলমের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছি। এর বাইরে আর কিছুই জানি না।’
জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, তারা বিষয়টি তদন্ত করছেন।
শাহ আলমের বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার মেয়র জি এম মীর হোসেন মীরু বলেন, ‘আমি আশা করব, সে তার ভুল বুঝতে পারবে। দেশে ফিরে আত্মসমর্পণ করে আবারও পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেবে। এতে করে বিদেশের দরবারে বাংলাদেশের সম্মান বাড়বে।’