বাংলাদেশে ১১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে। এমনটি জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সেই সঙ্গে আরও ১৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনে রয়েছে, যোগ করেন তিনি।
আসামের গুয়াহাটিতে ২৮-২৯ মে নদীবিষয়ক আন্তর্জাতিক কনক্লেভ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে এমনটি জানিয়েছেন জয়শঙ্কর।
আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে এতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন যোগ দেন। শিলংভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও থিঙ্কট্যাঙ্ক এশিয়ান কনফ্লুয়েন্সের আয়োজনে এই সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এর প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে।
এস জয়শঙ্কর আরও বলেন, জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের অপার সম্ভাবনা দুই দেশের সহযোগিতার ওপর নির্ভর করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের যুগে এমন উদ্যোগ আরও বেশি প্রাসঙ্গিক।
সীমান্ত যোগাযোগ আধুনিকায়নে জয়শঙ্কর বলেন, ‘বাংলাদেশের ভেতরে সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের অংশ হিসেবে আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর সড়কের উন্নতিসহ একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পে ভারতের ৪০ কোটি ডলারেরও বেশি সহযোগিতা চলমান রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রকল্প ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বারুরহাট থেকে রামগড় পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ চালু করবে। ফলে সড়ক পথে ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ আরও উন্নত হবে। এটি ৮ কোটি ডলারের আরেকটি সহযোগিতা প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘ত্রিপুরার সঙ্গে ফেনীর সংযোগ স্থাপনে ২০২১-এর মার্চে উদ্বোধন হওয়া মৈত্রী সেতুতে বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল (বিবিআইএন) যান চলাচল চুক্তির আওতায় শিগগিরই যান চলাচল শুরু করতে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।’
সম্মেলনে জয়শঙ্কর বলেন, দুই দেশের সীমান্তবর্তী বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন, ডিজিটাল কানেক্টিভিটি ও অবকাঠামো উন্নয়ন সংযোগের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
পরবর্তী যৌথ সম্মেলন প্রসঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ পরামর্শ কমিশনের বৈঠকে এসব উন্নয়ন এবং আরও অনেক ইস্যুতে পর্যালোচনা করব আমরা।’
গুয়াহাটিতে নদী সম্মেলনে যোগদানের ফাঁকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাইড লাইনে বৈঠক করেন ড. আব্দুল মোমেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘জয়শঙ্করের সঙ্গে দেখা হয়েছে। আমাদের ইমিডিয়েট ইস্যু ছিল গম। জয়শঙ্কর বললেন, গম নিয়ে সমস্যা হবে না। সরকারের সঙ্গে যেসব চুক্তি হয়েছে বা বেসরকারি খাতেও আমদানিতে সমস্যা নেই। কেবল বেসরকারি খাত যদি তৃতীয় দেশে গম পাঠাতে চায়, সেটা তারা দেবে না।’
বাংলাদেশের কারণেই ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সেভেন সিস্টার্স খ্যাত সাত রাজ্যের উন্নতি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, ‘আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন যে তার রাজ্য তথা এই অঞ্চলের উন্নতি হয়েছে বাংলাদেশের কারণে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্সের সুবাদে আসাম, মিজোরামসহ ওই অঞ্চলের উন্নতি হয়েছে।
বাংলাদেশকে জ্বালানি ও গম দিতে চায় রাশিয়া। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার ভয়ে এখনো এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি ঢাকা। অবশ্য প্রতিবেশী দেশ ভারত রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনছে। এ অবস্থায় রাশিয়া থেকে প্রয়োজনীয় এ দুটি পণ্য কিনতে বুদ্ধি-পরামর্শ চেয়েছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সোমবার সাংবাদিকদের এ কথা বলেছেন।
আসামের গুয়াহাটিতে নদীবিষয়ক আন্তর্জাতিক কনক্লেভে যোগদান শেষে রোববার দেশে ফিরে পরদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
জেসিসি বৈঠক পিছিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পাওয়ার শেয়ারিং বিষয়ে আমাদের সচিবপর্যায়ের মিটিং এখনও শেষ হয়নি। সড়ক ও রেল যোগাযোগ বিষয়েও মিটিং শেষ হয়নি। এগুলো সম্পন্ন না হলে আমরা গিয়ে কী করব?