বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

একই স্কুল ব্রহ্মপুত্রের এপারেও ওপারেও!

  •    
  • ৩১ মে, ২০২২ ০৮:১১

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা শিক্ষা কমিটির সদস্য সচিব অমিত চক্রবর্তী বলেছেন, ‘স্কুলটি কোথায় করলে ভালো হবে, আগামী মিটিংয়ে সে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে টানাপড়েন চলছে। আর এই টানাপড়েনের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদ!

নদের পশ্চিম পারে নিজের পছন্দের জায়গায় ঘর নির্মাণ করে শিক্ষার্থীদের একাই পড়াচ্ছেন প্রধান শিক্ষক। আর নদের পূর্ব পারে ওই বিদ্যালয়ের সব সহকারী শিক্ষক মিলে পাঠদান কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

গত ৮ এপ্রিল থেকে এ অবস্থা চললেও এখনও কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি উপজেলা শিক্ষা অফিস।

জানা যায়, উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের শংকর মাধবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়-১ আগে পূর্ব পারেই ছিল। তবে নদের ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকায় স্কুলটি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার তোড়জোড় শুরু হয়।

সহকারী শিক্ষকরা জানান, গত ১৩ মার্চ পূর্ব পারেরই একটি স্থানে স্কুলটিকে স্থানান্তর করতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম। কিন্তু হঠাৎ করেই তিনি মত পাল্টে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই ৮ এপ্রিল রাতে স্কুলের বিভিন্ন স্থাপনা নদীর পশ্চিম পারে নিয়ে যান। উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের ভেলামারীতে অবস্থিত সেই স্থানটি প্রধান শিক্ষকের নিজ এলাকা হিসেবে পরিচিত।

এ অবস্থায় ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ব্রহ্মপুত্রের পূর্ব পারে কোদালকাটি ইউনিয়নের শংকর মাধবপুরের বিলপাড়ায় অনেকটা খোলামেলা অবস্থায় শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছেন।

ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন ওই স্কুলের দুই অংশের দূরত্ব এখন প্রায় ৪ কিলোমিটার। বিদ্যালয় নিয়ে এমন টানাটানিতে হতাশায় পড়েছেন শংকর মাধবপুর এলাকার শতাধিক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।

সরেজমিনে পূর্ব পারে থাকা স্কুলের অংশে দেখা যায়, একটি ঘরে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে পড়াচ্ছেন ৩ সহকারী শিক্ষক। পরে এ জায়গা থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় চার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নদের পশ্চিম পারে স্কুলের অন্য অংশে গিয়ে প্রথমে কোনো শিক্ষককে দেখা না গেলেও কিছুক্ষণ পর হাজির হন প্রধান শিক্ষক নিজেই। এ সময় স্কুলের ভেতর ১১ শিক্ষার্থীর উপস্থিতিও দেখা যায়।

সহকারী শিক্ষক কল্পনা খাতুনের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের সরকারি ঘরসহ এর মালামাল আত্মসাৎ, ভুয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে সরকারি টাকা আত্মসাৎসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত প্রধান শিক্ষক। এসব অপকর্ম ঢাকতেই নিজের স্ত্রীকে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বানিয়েছেন তিনি।

২০১৯ সালে বিদ্যালয়টি নদী ভাঙনের শিকার হলে এর টিনশেড ঘরসহ বিভিন্ন মালামাল আত্মসাৎ করেছেন বলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন স্কুলের সহকারী শিক্ষক আমিনুল ইসলাম।

পূর্ব পারের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক আলাউদ্দিন বলেন, ‘এপারে তিন গ্রামের শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী। প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতায় তাদের এখন খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করতে হচ্ছে।’

এদিকে প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, ওই স্কুলের সব সহকারী শিক্ষকের বাড়ি উপজেলা শহরে। তারা দুর্গম এলাকায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াতে চান না। এ কারণে তারা দ্বিমত করছেন।

অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে দাবি করেছেন, এ বছর মাত্র দেড় লাখ টাকা সরকারি বরাদ্দ পেলেও বিদ্যালয়ের কাজে ৪ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন তিনি।

স্কুলের দুই অংশ নিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘উপজেলা শিক্ষা কমিটি ছাড়া এখানে আমার করার কিছুই নাই। স্কুল চলবে কি চলবে না এটা স্কুল ম্যানেজিং কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। স্কুল ম্যানেজিং কমিটি চাইলে স্কুল বন্ধও করে দিতে পারে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা শিক্ষা কমিটির সদস্য সচিব অমিত চক্রবর্তী বলেছেন, ‘স্কুলটি কোথায় করলে ভালো হবে, আগামী মিটিংয়ে সে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর