বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যাত্রাবাড়ীতে পানির দাম ২০ টাকা হলে গুলশানে হওয়া উচিত ৫০

  •    
  • ৩০ মে, ২০২২ ২২:০১

‘আমি ভালো জায়গায় আছি, যেখানে ফ্যাসিলিটি বেশি, তাই আমাকে অবশ্যই বেশি দাম দিতে হবে। যাত্রাবাড়ীতে যদি পানির দাম ২০ টাকা হয়, তাহলে অভিজাত এলাকায় ৫০ টাকা হওয়া উচিত। কারণ, এসব খাতে সরকার টাকা দেয়, সুতরাং তা সবার জন্য দেবে কেন? সরকার সবার জন্য সাবসিডি দেবে কেন?

অভিজাত এলাকার বাসিন্দাদের ভর্তুকি মূল্যে পানি-বিদ্যুৎ-গ্যাস বন্ধ করতে চান স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম। বলেছেন, যেসব এলাকায় নিম্ন আয়ের মানুষ থাকে, সেসব এলাকায় ভর্তুকি মূল্যে এগুলো সরবরাহ করা যায়।

শুধু পানি, গ্যাস বা বিদ্যুৎ নয়, হোল্ডিং ট্যাক্সসহ অন্যান্য সেবার মূল্যের ক্ষেত্রেও একই নীতিমালা চান মন্ত্রী।

সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ওয়াসা ভবনের ‘ডিসেমিনেশন সেমিনার অব জয়েন্ট রিসার্চ প্রজেক্ট অন কোভিড-১৯ বাই ঢাকা ওয়াসা অ্যান্ড আইসিডিডিআরবি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন আইসিডিডিআরবির সাবেক নির্বাহী পরিচালক জন ডি ক্লেমেনস।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু আমরা যারা বড়লোকরা, গুলশানে থাকি বনানীতে থাকি, আমাদের গায়ে আসবে বলে আমরা এ নিয়ে কথা বলি না। আমার কথা হচ্ছে, আপনি বনানীতে থাকলে পানির যে দাম দেবেন, যাত্রাবাড়ীতে একই দাম দেবে অথবা ঢাকার বাইরে একই দাম দেবে, এটা কি ইকুইটেবল হয়?

‘আমি ভালো জায়গায় আছি, যেখানে ফ্যাসিলিটি বেশি, তাই আমাকে অবশ্যই বেশি দাম দিতে হবে। যাত্রাবাড়ীতে যদি পানির দাম ২০ টাকা হয় তাহলে অভিজাত এলাকায় ৫০ টাকা হওয়া উচিত। কারণ, এসব খাতে সরকার টাকা দেয়, সুতরাং তা সবার জন্য দেবে কেন? সরকার সবার জন্য সাবসিডি দেবে কেন?

সরকার যে ভর্তুকি দেয়, তা শহরে নিম্ন আয়ের বাসিন্দারা থাকে যেসব এলাকায় অথবা গ্রামে দেয়ার পক্ষে তাজুল। বলেন, ‘অভিজাত এলাকায় দেবে কেন? বিদ্যুতে সরকার ভর্তুকি দেয়, বছরে ৭-৮ হাজার কোটি টাকা লস দেয়। এই লস আমার অভিজাত এলাকায় দেবে কেন? আমি সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বেশি পাচ্ছি।’

উচ্চবিত্তদের বাড়তি দাম দেয়ার সক্ষমতা আছে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বড় চাকরি করি, বড় ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট, মাসে প্রচুর ইনকাম, লাখ লাখ টাকা আয়। তারপরও কেন আমাকে কম দামে পানি-বিদ্যুৎ পেতে হবে। এটা কি ইনজাস্টিস নয়? এসব সুযোগ-সুবিধা গ্রামে দেব যাতে সবাই গ্রাম ছেড়ে ঢাকামুখী না হয়।’

‘পানিতে যেন কোনো ভাইরাস না থাকে’

ওয়াসার পানিতে করোনার ভাইরাস নেই বলে সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খানের এমন একটি বক্তব্যেরও প্রতিক্রিয়া জানান স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।

ওয়াসার এমডিকে তিনি বলেন, ‘ওয়াসার পানিতে করোনাভাইরাস নেই ঠিক আছে, তবে পানিতে যেন অন্য কোনো ভাইরাস না থাকে সেই দিকে খেয়াল রাখবেন।

‘ঢাকা ওয়াসা যে পানি উৎপাদন করে তা অ্যাবসুলুটলি পিউর'। তবে লাইনে যাবার সময় এটাতে সমস্যা হয়। পাইপ ছিদ্র হয়। এতে পানির মান খারাপ হয়। লাইন যেন কোথাও নষ্ট না হয়। এমনকি কেউ যেন অবৈধ সংযোগ নিয়ে লাইনের ক্ষতি করতে না পারে তার জন্য ওয়াসাকে সতর্ক থাকতে হবে। যাতে ওয়াসার পানির ভেতর সুয়ারেজের পানি ঢুকতে না পারে। প্রয়োজনে পরিদর্শন বাড়াতে হবে।’

মন্ত্রী জানান, পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ থেকে মানুষকে বাঁচার জন্য সরকার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে এবং এ ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে। পানি সরবরাহের পুরোনো লাইন পাল্টে নতুনভাবে সংযোজন করা হচ্ছে, যাতে করে জীবাণুমুক্ত পানি সরবরাহ করা সম্ভব হয়।

পানিতে করোনা ভাইরাস নিয়ে গবেষণার ফল

অনুষ্ঠানে ওয়াসার পানিতে কোভিড ভাইরাস আছে কি না সে বিষয়ে করা এক গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়।

২০২০ সালের ১ আগস্ট থেকে ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত করা গবেষণায় ঢাকা ওয়াসার পাগলা সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, নারিন্দা, বাসাবো পয়ঃপাম্পিং স্টেশনের পানি নমুনা হিসেবে নেয়া হয়।

ভূ-পৃষ্ঠের পানির নমুনা নেয়া হয়েছে ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথের (আইপিএইচ) পুকুর, মিরপুরের মাজার পুকুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হল পুকুর এবং বুড়িগঙ্গা এবং আব্দুল্লাহপুরের তুরাগ নদী থেকে।

গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, অপরিশোধিত সুয়ারেজের পানিতে কোভিড-১৯ পাওয়া গেছে। কিন্তু ঢাকা ওয়াসার পাগলা সুয়ারেজের ট্রিটমেন্টের প্লান্টে (পিএসটিপি) পরিশোধিত পয়ঃনিষ্কাশন পানিতে কোথাও করোনার ভাইরাস পাওয়া যায়নি। এমনকি ঢাকা শহরের পুকুর ও নদীতে থেকে সংগৃহীত নমুনায়ও করোনার উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।

গবেষণাটি পরিচালনা করেন আইসিডিডিআরবির এমিরেটাস সায়েনটিস্ট সিরাজুল ইসলাম। আইসিডিডিআরবি ও ঢাকা ওয়াসা গবেষণাটির আয়োজন করে।

ওয়াসার এমডি তাকসিম বলেন, ‘গবেষণায় ফলে দেখা গেছে যে শুধু ওয়াসার পানিতে না, ঢাকার কোনো পানিতেই করোনার ভাইরাস নেই। আমরা নিশ্চিত ঢাকা ওয়াসার পানিতে কোভিড-১৯-এর কোনো ভাইরাস নেই। তার কোনো সম্ভাবনাও নেই।’

এ বিভাগের আরো খবর