বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘কারখানার দূষিত পানিতে’ মরছে উদ্যোক্তার মাছ

  •    
  • ৩০ মে, ২০২২ ২০:৪৬

ভুক্তভোগী রাশেদুল বলেন, ‘মেইন রিজনটা হচ্ছে, পাশেই আরন ডেনিম নামে একটা ফ্যাক্টরি আছে। এই ফ্যাক্টরির বর্জ্য সিইটিপির মাধ্যমে শোধন করে বাইরে ছাড়ার কথা। কিন্তু সেটা তারা করছেন না। রাতের আঁধারে বা গোপনে যেভাবেই হোক তারা বিলে বিষাক্ত ক্যামিকেলমিশ্রিত পানি ফেলছেন। এই পানি টেস্ট করানো হলে অবশ্যই দূষণের কারণ ধরা পড়বে।’

বিলের প্রায় ১০ একর জমি লিজ নিয়ে মাছ ছেড়েছেন ঢাকার সাভারের তরুণ উদ্যোক্তা রাশেদুল ইসলাম সজল। কিন্তু গত দু’তিন দিন ধরেই মরে ভেসে উঠছে চাষের এসব মাছ।

ভুক্তভোগী রাশেদুলের দাবি, এখন পর্যন্ত ঘেরে মরে ভেসে ওঠা প্রায় ১৫০ মণ মাছ তুলেছেন তিনি। তার ধারণা, এসব মাছ মরেছে সেখানকার আরন ডেনিম লিমিটেড কারখানার ক্যামিকেলমিশ্রিত দূষিত পানির বিষক্রিয়ায়।

সোমবার দুপুরে আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নের চারিগ্রাম তাতী বিলের ওই ঘেরে গিয়ে মাছ মরে ভেসে থাকতে দেখা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির আশংকায় দিশেহারা প্রবাসফেরত ওই যুবক।

ঘেরের পাড়ে দাঁড়িয়ে রাশেদুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তাতী বিলের প্রায় ১০ একর জমি লিজ নিয়ে দুই বছর ধরে আমি মাছ চাষ করছি। হঠাৎ ২/৩দিন ধরেই মাছ মরে ভেসে উঠছে। প্রতিদিন মরা মাছ উঠাচ্ছি।’

এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫০ মণ মরা মাছ তোলা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘রুই, কাতলা, মৃগেল, তেলাপিয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মরে যাচ্ছে। তবে তেলাপিয়া, বিগহেড ও কার্প জাতের মাছ মারা যাচ্ছে বেশি।’ এতে ১৩ থেকে ১৫ লাখ টাকার ক্ষতির আশংকা করছেন তিনি।

কারখানার ক্যামিকেলমিশ্রিত দূষিত পানির বিষক্রিয়ায় এসব মাছ মারা যাচ্ছে ধারণা করে রাশেদুল বলেন, ‘আমার ঘেরের সব পানি কালো হয়ে গেছে। মেইন রিজনটা হচ্ছে, পাশেই আরন ডেনিম নামে একটা ফ্যাক্টরি আছে। এই ফ্যাক্টরির বর্জ্য সিইটিপির মাধ্যমে শোধন করে বাইরে ছাড়ার কথা। কিন্তু সেটা তারা করছেন না।

‘রাতের আঁধারে বা গোপনে যেভাবেই হোক তারা বিলে বিষাক্ত ক্যামিকেলমিশ্রিত পানি ফেলছেন। এই পানি টেস্ট করানো হলে অবশ্যই দূষণের কারণ ধরা পড়বে। পানির গন্ধে বোঝা যাচ্ছে কারখানার বর্জ্য এখানে এসে আমার মাছ মারা যাচ্ছে।’

আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ‘আমি মালয়েশিয়ায় পড়াশুনা শেষ করে এসে ব্যক্তি উদ্যোগে কিছু করার চেষ্টা করছিলাম। পরে শেখ হাসিনা যুব উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করি। প্রথম বছর কোনও লাভের মুখ দেখিনি। তবে যখন লাভের মুখ দেখতে শুরু করব এই সময় আমার মাছগুলো মরে যাচ্ছে।

‘আমি দুই/তিন ধরেই অনেকটা না খেয়ে দিন পার করছি। আমার খেতে মন চাইছে না। ঘেরের পাড়ে আসলে কষ্টে বুকটা ফেটে যাচ্ছে। কোথায় যাব, কি করব বুঝতেছি না।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরন ডেনিম লিমিটেডের এজিএম (এ্যাডমিন) মো. শফিক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরাতো এ ধরনের কিছু জানি না। এরকম কিছু হওয়ার কথা না। আমরা ২৪ ঘণ্টাই ইটিপি চালাই। তাছাড়া এখন আমাদের কাজ-কর্মও একটু কম।

‘আমাদের ইটিপির সক্ষমতা প্রতি ঘণ্টায় ৫০ মিটার কিউব। এখন আমাদের কাজ হচ্ছে ২৫ মিটার কিউবেরও কম। তাই এরকম হওয়ার কথা না। আর ফ্যাক্টেরিতো আমাদের একার না। আশেপাশে আরও ফ্যাক্টেরি আছে। যাই হোক, আমরা জানি না আসলে কার থেকে কি হয়েছে’ যোগ করেন তিনি।

সাভার উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল হাসান সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি উনাকে (রাশেদুল) বলেছি তার ঘেরের পানি আনতে। আমরা পানি পরীক্ষা করে দেখব এবং সে অনুযায়ী সমাধান দিতে পারব। কারখানার বর্জ্য পানি যদি ঘেরে আসে, তাহলে তা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।

এ বিভাগের আরো খবর