রাজধানীর মিরপুরে ২০১৩ সালে দোকানি কাজী জহুরুল ইসলাম বাবু হত্যা মামলায় একজনকে মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
ঢাকার ১০ নম্বর বিশেষ দায়রা আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম সোমবার এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন এমাদুল হক ওরফে গন্ডার, শহীদুল্লাহ, মনির ও আজাদুল। তাদের মধ্যে শহীদুল্লাহকে মৃত বলে দাবি করেছে আসামিপক্ষ। যদিও এ বিষয়ে আদালতে কোনো মৃত্যুসনদ দেয়া হয়নি।
আসামিদের সবার বাড়ি রাজধানীর মধ্যমনিপুরের বিভিন্ন ঠিকানায়।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, দোকান বন্ধ থাকায় ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই জহুরুলকে তার বাসা থেকে ডেকে আনেন শহীদুল্লাহ। সেখানে শহীদুল্লাহসহ কয়েকজন তাকে মারধর করেন।
মারধরের একপর্যায়ে এমাদুল তার হাতে থাকা ছুরি দিয়ে জহুরুলের পিঠে ও ডান কোমরের ওপরে পেটে আঘাত করে গুরুতর জখম করেন। জহুরুল চিৎকার দিয়ে রাস্তায় পড়ে গেলে হামলাকারীরা দৌড়ে পালিয়ে যান। চলে যাওয়ার আগে এমাদুল বলেন, ‘সাত বছর পর প্রতিশোধ নিলাম।’
শহীদুলকে প্রথমে গ্যালাক্সি হাসপাতাল ও পরে শমরিতা হাসপাতালে নেয়া হয়। সবশেষে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
এ ঘটনার দিনই মিরপুর মডেল থানায় জহুরুলের ভাই কাজী তাজুল ইসলাম চারজনের (এমাদুল, মনির, আজাদুল ও শহীদুল্লাহ) নাম উল্লেখ এবং আরও চার থেকে পাঁচজনকে অজ্ঞাতনামা দেখিয়ে মামলা করেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মাহবুবুল হাসান জানান, ২০১৩ সালের ঘটনার সাত বছর আগে একটি ছিনতাই হয়েছিল। সেই ঘটনায় ছিনতাইকারী এমাদুল হক গন্ডার ও তার সহযোগীদের র্যাবের হাতে ধরিয়ে দিয়েছিলেন জহুরুল।
রায়ে বাদী তাজুল ইসলাম সস্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, ‘এ রায় দ্রুত যেন কার্যকর করা হয়। দণ্ডিতরা এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী ও ভাড়াটে পেশাদার খুনি। তাদের বিরুদ্ধে আরও মামলা রয়েছে।’
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘আসামিপক্ষ বলছে, পলাতক দণ্ডিত শহীদুল্লাহ মারা গেছেন, কিন্তু এ সম্পর্কে আদালতে কোনো মৃত্যু সনদ দাখিল করা হয়নি বা আদালতকে জানোনো হয়নি।’
দণ্ডিতদের আইনজীবী রুহুল আমিন বলেন, ‘রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’