দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মামলায় যশোর কাস্টমসের এক সাবেক কর্মকর্তাকে ৮ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছে আদালত।
একই সঙ্গে তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
যশোরের স্পেশাল জজ (জেলা ও দায়রা জজ) আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সামছুল হক রোববার সন্ধ্যায় রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত কে এম সিদ্দিকুর রহমান কাস্টমস এক্সাইজ ভ্যাট যশোরের সাবেক পরিদর্শক ছিলেন। শহরের ঘোপ সেন্টাল রোডের কবি গোলাম মোস্তাফা বাইলেনের বাসিন্দা তিনি। জেলহাজতেই রয়েছেন তিনি।
সোমবার সকালে নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম।
আদালত জানিয়েছে, সিদ্দিকুর রহমান ১৯৯৮ সালের ৭ জুন দুদকের নোটিশ অনুযায়ী তার অর্জিত সম্পদের বিবরণ জমা দেন। এই বিবরণীতে তিনি শহরের ঘোপ সেন্টাল রোডে ৯ দশমিক ৯৫ শতক জমির ওপর একটি দোতলা বাড়ি আছে বলে উল্লেখ করেন। বাড়িটি তিনি ও তার স্ত্রী মিলে ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করেছেন বলে উল্লেখ করেন।
কিন্তু প্রাথমিক তদন্তে বাড়িটি নির্মাণ করতে ৩৪ লাখ ৫৯ হাজার ৮৫৬ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানা যায়। তিনি আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করতে বাড়ির দাম নির্ধারণ করেছিলেন ১৩ লাখ টাকা। এ বাড়ির জমি থেকে স্ত্রী ও দুই ছেলেকে ১ দশমিক ১৯ শতক দান করেছেন বলেও মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন হিসাব বিবরণীতে।
২০০২ সালের ৩১ অক্টোবর তৎকালীন দুদক কর্মকর্তা আব্দুর রব নকিব আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সিদ্দিুকর রহমানের নামে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তে ২৭ লাখ ৬৬ হাজার ৭৪২ টাকার সম্পদ আয়বহির্ভূত বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।
সিদ্দিকুর রহমানকে অভিযুক্ত করে ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদকের সহকারী পরিচালক সৈয়দ আহমেদ।
সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে দুদক আইনের ৪(২) ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া দুদক আইনের ৫(১) ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে আরও ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। উভয় সাজা একই সঙ্গে চলবে।
রায়ে আয়বহির্ভূত অর্জিত সম্পদ ২৭ লাখ ৬৬ হাজার ৭৪২ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।