বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করোনা নেই, চাকরিও নেই

  •    
  • ৩০ মে, ২০২২ ০৮:২০

অস্থায়ী কর্মীদের বিষয়ে রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক হাবিবুল আহসান তালুকদার বলেন, ‘এখন তো করোনা নেই। তা ছাড়া তারা তো চুক্তিভিত্তিক ছিল। চুক্তি শেষ মানেই চাকরি শেষ।'

আব্দুলাহ আল নোমানের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলায়। ২০২০ সালে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের আরটি-পিসিআর ল্যাবে, ল্যাব সহকারী হিসেবে। কাজ ছিল করোনা পরীক্ষা করতে আসা রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করা।

এ কাজ করতে গিয়ে তিনি ৭ বার করোনায় আক্রান্ত হন। এখন গত ৭ মাসের বেতন তার বকেয়া।

গত অক্টোবর মাসের পর থেকে আর কোনো বেতন পাননি তিনি। পরিবার নিয়ে এখন আছেন বিপাকে; বাবার কাছ থেকে টাকা এনে চালাচ্ছেন সংসার।

নোমানের মতো ওই পিসিআর ল্যাবের ৪ জন ল্যাব সহকারীর এখন এই দুর্দশা। বেতন না পেয়ে সবার সংসারেই চলছে টানাটানি।

নোমান নিউজবাংলাকে জানান, কয়েক দফা মেয়াদ বাড়লেও নতুন করে আর চাকরির মেয়াদ বাড়ানো হয়নি। আবার কোনো নোটিশও দেয়া হয়নি। এখন চাকরি আছে না শেষ তাও তিনি নিশ্চিত নন। তারপরও কাজ করে যাচ্ছেন এই ল্যাব সহকারীরা।

তিনি বলেন, ‘যখন করোনার ভয়ে নিজের বাবা-মাকে ফেলে রেখে পালাচ্ছিল মানুষ, তখন ঝুঁকি নিয়েই আমরা কাজ করেছি। কখনও ভয় করিনি। করোনায় আক্রান্ত মানুষের নমুনা সংগ্রহ করেছি। মৃত ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করেছি।’

হতাশ কণ্ঠে নোমান বলেন, “এই কাজ করার কারণে সে সময় সবাই আমাকে দূরে রাখতে চাইত। আমার পরিবার ছাড়া সবাই দূরে দূরে থাকত। বাজারে গেলেও লোকজন বলত, ‘করোনা নিয়ে কাজ করে, ওকে কাছে আসতে দেয়া যাবে না’। কিন্তু আমি মনে করেছি, এটা আমার কর্তব্য।

“মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা করোনা আক্রান্ত মানুষের সেবা করেছি। কিন্তু এখন যখন করোনা কমে গেল, তখন আর বেতন নাই। চাকরিও নাই। আমি চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেবেন।"

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ ল্যাব সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে ১৩৪ জন ল্যাব সহকারী নিয়োগ দেয়া হয় ২০২০ সালের ৮ জুলাই। তখন তাদের মেয়াদ ছিল ৩ মাস ২৮ দিন।

এরপর দুই দফায় মেয়াদ বাড়ানো হয়। সবশেষ গত বছরের ২৮ অক্টোবর তাদের মেয়াদ শেষ হয়। এরপর আর কোনো নোটিশ দেয়া হয়নি, তাদের আর কোনো বেতনও দেয়া হয়নি।

রাজশাহী মেডিক্যালের আরেক ল্যাব সহকারী জামালপুরের হুমায়ুন কবির।

তিনি বলেন, ‘বেতন নেই, বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে নিয়ে চলছি। আশায় বসে আছি, বেতন হবে বলে।’

‘আগে আমাদের বেতন হতো সময় মতোই। মেয়াদ শেষ হলে আমাদের নতুন করে মেয়াদ বাড়ানোর চিঠিও দিত। এখন বেতন না হলেও আমরা ল্যাবে যাচ্ছি, যেটুকু কাজ থাকছে করছি।’

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ নওশাদ আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওই কর্মীদের বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। ৬ জনের মধ্যে এখন ৪ জন নিয়মিত ডিউটি করছেন।

‘তাদের চাকরির মেয়াদের বিষয়ে আমরা জানুয়ারি মাসেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছি। এখন পর্যন্ত এটার কোনো সিদ্ধান্ত পাইনি। এখানে যারা এখন আছেন, তারা এখনও আশায় আছেন। এটার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে অধিদপ্তর।’

এই অস্থায়ী কর্মীদের বিষয়ে রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক হাবিবুল আহসান তালুকদার বলেন, ‘এখন তো করোনা নেই। তাছাড়া তারা তো চুক্তিভিত্তিক ছিল। চুক্তি শেষ মানেই চাকরি শেষ।

‘তবে চুক্তি অনুযায়ী যদি তাদের কোনো বেতন আটকে থাকে, সেটি তারা পাবে। এগুলো দাতা সংস্থার মাধ্যমে চলে। তারা এতটা খারাপ নয় যে পাওনা বেতন দিবে না। তবে নতুন করে মেয়াদ বাড়াবে কি না সেটি বলতে পারব না।’

এ বিভাগের আরো খবর