নিজ দলে ভুঁইফোঁড়দের রাজত্বের অবসান চেয়েছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ।
রোববার চট্টগ্রামের হাটহাজারী মডেল সরকারি পার্বত্য উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘রাজনীতি মানে মানুষের অধিকার আদায় করা। যখন কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা গোত্রের অধিকার হরণ হয় বা নিপীড়িত হয়, তখনই যুবলীগ প্রতিবাদী কণ্ঠ হিসেবে ভূমিকা রাখে, এটাই যুবলীগের চরিত্র। তবে দলের মধ্যে ভুঁইফোঁড়দের রাজত্বের অবসান করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘যুবলীগের দুটি দায়িত্ব। প্রথমত যুবলীগকে যেকোনো মূল্যে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে সব ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করতে হবে। দ্বিতীয়ত রক্ষা করতে হবে বঙ্গবন্ধুকন্যার অর্জনগুলোকে। তিনি বাংলাদেশকে সম্মান ও সফলতা এনে দিয়েছেন। এ সম্মান আমাদের ধরে রাখতে হবে।
‘আমাদের নির্ণয় করতে হবে কীভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। সে জন্য দক্ষতা বাড়াতে হবে। আমাদের সামনে অনেক প্রতিকূলতা। শান্তির বাংলাদেশ গড়ার জন্য যুব সমাজকে যুব শক্তিতে রূপান্তরিত করতে হবে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি প্রকাশ্যে বলতে চাই, পদপদবি পাওয়ার জন্য আমাদেরকে কোনো উপঢৌকন দিতে হবে না। কোনো আর্থিক সহায়তা লাগবে না। আমাদের প্রত্যাশা, পদপদবি নিয়ে আপনারা টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি বা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবেন না।’
পরশ বলেন, ‘স্বাস্থ্য সম্পাদক হবেন অথচ নেতাকর্মীদের স্বাস্থ্যের খবর নেবেন না, মহিল সম্পাদিকা হবেন আর নির্যাতিত, নিপীড়িত মহিলাদের খোঁজখবর রাখবেন না, আইন সম্পাদক হবেন আর নেতাকর্মীদের আইনি সাহায্য দেবেন না, এই রকম নেতা আমাদের সংগঠনে দরকার নাই।
‘সামনে যে দিন আসছে, এ রকম নেতাকর্মী নিয়ে আমরা বেশি দিন এগোতে পারব না। আর সাংগঠনিক পদপদবি কোনো বাজারি পণ্য নয় যে চাইলেন আর পেয়ে যাবেন।’
নেতাকর্মীদের দুর্নীতিতে না জড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছে অনুরোধ, দুর্নীতিগ্রস্ত হবেন না। দুর্নীতি নামক রোগ সমাজে ঢুকলে এর থেকে মুক্তি পাওয়া কষ্টকর।
‘দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ আমাদের প্রজন্মকে করতে হবে, যুবলীগকেই করতে হবে। যুবলীগ দুর্নীতি নিয়ন্ত্রিত সমাজব্যবস্থা গঠন করবে। আর ধাপে ধাপে নিয়মতান্ত্রিকভাবে আত্ম সংশোধনের মাধ্যমে দুর্নীতি বর্জন করা সম্ভব।’
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগ সভাপতি এস এম আল মামুনের সভাপতিত্বে সম্মেলন সঞ্চালনা করেন হাটহাজারী উপজেলা চেয়ারম্যান রাশেদুল আলম।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, সাংসদ এ বি এম ফজলে করিম, মাহফুজুর রহমান মিতা, খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, আওয়ামী যুবলীগের সিনিয়র সদস্য নিয়াজ মোর্শেদ এলিট।