পুলিশ, ছাত্রলীগ ও বিএনপির মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনায় ৮৯২ জনের নামে মামলা করা হয়েছে।
খুলনা সদর থানার এসআই বিশ্বজিৎ কুমার বোস বৃহস্পতিবার রাতেই এ মামলা করেন।
সংঘর্ষের দিন ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার হওয়া অনেক নেতাকর্মী এখনও জামিন পাননি। তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি ও নতুন করে কাউকে গ্রেপ্তার না করার জন্য রোববার দুপুরে খুলনায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি।
খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনের সামনে থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মহানগর ও জেলা বিএনপির যৌথ আয়োজনে মিছিলটি শুরু হয়। এরপর সার্কিট হাউস, স্টেডিয়াম মার্কেট, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, কেসিসি মার্কেট, জেলা পরিষদ ভবনের সামনের সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ হাদিস পার্কসংলগ্ন এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।
এরপর সেখানে পথসভা হয়। এতে বক্তব্য দেন খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা, খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমির এজাজ খান, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী।
সভায় শফিকুল আলম বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সিনিয়র সিটিজেনদের সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার করা বক্তব্যের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেলে খুলনায় বিক্ষোভ সমাবেশে পুলিশের সহায়তায় আমাদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ-যুবলীগ। পুলিশ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীর দায়িত্ব ভুলে সরকারের লাঠিয়াল বাহিনী হয়ে কাজ করছে। তারা বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বানচালে গুলি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেছে।’
‘পুলিশ বিএনপির সমাবেশের চেয়ার ও মঞ্চ ভাঙচুরে অংশ নিয়েছে, যা বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের সরাসরি ভিডিও ফুটেজে প্রচার হয়েছে। পুলিশ নজিরবিহীন ইতিহাস সৃষ্টি করে তালা ভেঙে বিএনপি অফিসে প্রবেশ করে, আসবাবপত্র ও কাচের গ্লাস ভাঙচুর করেছে, গুরুত্বপূর্ণ নথি ও কাগজপত্র লুটপাট করে।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বলেন, ‘সেখান থেকে মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব শফিকুল আলম তুহিন, নারী নেত্রী সৈয়দা রেহানা ঈসাসহ বহু নারী কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। সংঘর্ষের সময় ৪১ জনকে গ্রেপ্তারের পর রাতে পুলিশ বানোয়াট মামলা করে। আমাদের ওপর যৌথভাবে হামলা করল পুলিশ ও ছাত্রলীগ, আবার মামলার আসামিও হলাম আমরা।
‘ইতোমধ্যে গত শুক্রবার ১২ নারী নেত্রীকে জামিন দিলেও ২৯ জনকে জেলে পাঠানো হয়েছে। আমরা তাদের নিঃশর্ত মুক্তি চাই।’
সভায় খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক বলেন, ‘আগামী ৩০ মে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকীর কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করতে পুলিশ তালবাহনা শুরু করে দিয়েছে। শনিবার রাতে পুলিশ অসংখ্য বিএনপি নেতাকর্মীর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে।
‘এ ছাড়া সোনাডাঙ্গা থানা যুবদল নেতা সাইফুল ইসলাম ও সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদল সভাপতি ইবনুর রহমান ইমুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ সদস্যরা বাড়িতে দরজা ভাঙচুর ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন।’