বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে ভারতের সঙ্গে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক সব ক্ষেত্রে সম্পর্ক হতে হবে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে।
‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ও জাতীয় স্বার্থ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এ কথা বলেন। রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’। সভায় সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন।
গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘একাত্তরে ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণের ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। তবে এখন বাংলাদেশ ও দেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক বিদ্যমান নেই। ভারত এখন আমাদের শোষণ করছে। ভারতের জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হবে কোনো বিশেষ দলের প্রতি আগ্রহী না হয়ে বাংলাদেশ ও এর জনগণের প্রতি আগ্রহী হওয়া।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানিতে ভারসাম্য নেই। এমনকি ভারতের স্বাস্থ্য খাতে আয়ের ৬৪ শতাংশই যায় বাংলাদেশ থেকে। পোশাক খাতেও দেশটি আমাদের শোষণ করছে।
‘ভারতের অনেকেই বাংলাদেশে চাকরি করছে, যা বাংলাদেশ সরকার প্রকাশ করে না। আমাদের দেশের লোক চাকরি পায় না, অথচ তাদের অনেকেই অবৈধভাবে এখানে থেকে টাকা পাচার করে ভারতে। এভাবেই ভারত আমাদের শোষণ করছে।’
অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতার পেছনে ভারতের ভিন্ন উদ্দেশ্য ছিল।
‘তিস্তার পানিসহ অন্যান্য নদীর পানির হিস্যা ভারতকে যথাযথভাবে দ্রুততার সঙ্গে বাংলাদেশকে বুঝিয়ে দিতে হবে। সীমান্ত হত্যা বন্ধে সত্যিকারভাবে ভারতকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। নৌ, সড়ক, আকাশপথে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের কানেক্টিভিটি হতে হবে জনগণের স্বার্থে।’
সাবেক কূটনীতিক সাকিব আলী বলেন, ‘বাংলাদেশ হলো ভারতীয় উপমহাদেশের হার্টল্যান্ড। এ জন্য ভারতের টার্গেট বাংলাদেশ। ভারতের সঙ্গে আমাদের বিরোধিতা না, বিরোধিতা দিল্লির সঙ্গে। ভারতের সব অঞ্চল এক নয়।’
বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, ‘আমরা ভারতের বিরুদ্ধে নই, তাদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। ভারত এমন রাষ্ট্র যার সঙ্গে প্রতিবেশী কোনো রাষ্ট্রের সম্পর্ক ভালো নেই।
‘তিস্তা ও পদ্মার পানি ইস্যুতে ভারত আমাদের শোষণ করছে। প্রয়োজনের সময়ে পানি না দিয়ে অপ্রয়োজনে বাঁধ ছেড়ে তারা আমাদের এখানে বন্যার সৃষ্টি করছে।’