কলেজের ভেতরে প্রবেশ করলে দেখা যাবে মাঠজুড়ে পানি। প্রথম দেখায় পুকুরও মনে হতে পারে। শুধু বর্ষাকাল নয়, বছরের আট মাসই পানির নিচে থাকে এই মাঠ।
কলেজের মাঠের এমন জলাবদ্ধতা একদিকে যেমন শিক্ষার্থীদের খেলার পরিবেশ নষ্ট করছে, তেমনি অ্যাকাডেমিক বিভিন্ন কাজও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এমন অবস্থা মাগুরার অন্যতম পুরোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মাগুরা আদর্শ কলেজের।
প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘কলেজের পূর্ব-দক্ষিণ কোণে রয়েছে একটি নালা। সেখানে আগে একটি পাইপ দেয়া ছিল, মাঠের পানি চলে যাওয়ার জন্য। দেয়াল দেয়ার পর সেই পাইপটি আর নেই। ফলে জলাবদ্ধতার পরিমাণ বেড়েছে।
‘স্থানীয় সংসদ সদস্য কিছুটা সহযোগিতা করেছিলেন। আরও কিছু সহযোগিতা প্রয়োজন। কলেজটিতে প্রায় হাজারও শিক্ষার্থী রয়েছে। এইচএসসি থেকে ডিগ্রি পর্যন্ত পড়ানো হয়। শিক্ষার্থীরা কলেজে এসে কোনো খেলাধুলা করতে পারে না। তাদের খুবই সমস্যা হচ্ছে।’
মাগুরা আদর্শ কলেজের পাশেই রয়েছে মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়টি দেড় শত বছরের বেশি পুরোনো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। সরকারি প্রতিষ্ঠান হলেও এর চারপাশে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমতে শুরু করে।
রোববার গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের প্রবেশপথের দুই ধারে পানি জমেছে। সেই সঙ্গে অ্যাকাডেমিক ভবনের একটা অংশের সামনে প্রচুর পানি জমে আছে।
বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, তারা প্রভাতি শিফটে পড়াশোনা করে। সকালে বিদ্যালয়ের সামনে জাতীয় সংগীতসহ যে অ্যাসেম্বলি নিয়মিত হয়, তাতে এই পানি ও কাদা বাধা হয়ে দাঁড়ায় প্রতি বছর।
শিক্ষার্থীরা আরও জানায়, জলাবদ্ধতার কারণে পানিতে মশার বসবাস শুরু হয়। যা ক্লাসে প্রবেশ করে তাদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। এর সমাধান তারা শিক্ষকদের কাছে কয়েকবার চেয়েছে।
মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে সামান্য বৃষ্টি হলেই শুরু হয় জলাবদ্ধতা। ছবি: নিউজবাংলা
মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াউল হাসান বলেন, ‘বিদ্যালয়ে প্রায় ১২০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। দুটি শিফটে পাঠদান চলে। বৃষ্টির সময়ে পানি জমে পূর্বদিকে। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের সমানেও পানি জমে। মূলত পানি বের হওয়ার কোনো জায়গা নেই।
‘এ সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবগত। কিছু কাজ হয়েছে। বাকি কাজ আশা করছি হয়ে যাবে। শিক্ষার্থীদের একটু সমস্যা হচ্ছে। তবে এটা র্দীঘদিন ধরে জলাবদ্ধতাজনিত সমস্যা। সময়ের সঙ্গে হয়তো এটা নিরসন হবে।’
মাগুরার এই দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও কিছু কলেজ, হাইস্কুল, মাদ্রাসায় বৃষ্টির সময় জলাবদ্ধতা হয়। ফলে খেলাধুলাসহ পাঠদানেও নানা রকম ভোগান্তি রয়েছে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জলাবদ্ধতার সমস্যার কথা আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নানা সময়ে অবহিত করেছি। এটা খুবই দুঃখজনক বিষয়।
‘আমি এসব প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে কথা বলব। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাও বলেছি। আশা করি, তাদের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’