একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নওগাঁ জেলার জামায়াতের সাবেক আমীর রেজাউল করিম মন্টুসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আগামী মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
রোববার বিচারপতি শাহিনুর ইসলামসহ তিন বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল রায়ের জন্য এ দিন ঠিক করে দেয়।
রায়ের বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী, আবুল কালাম আযাদ ও তাপস কুমার বল।
এ সময় আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।
প্রসিকিউটর আবুল কালাম আযাদ নিউজবাংলাকে বলেন, মামলাটি গত ২৬ এপ্রিল সিএভি রাখেন ট্রাইব্যুনাল। মামলায় তিনজন আসামি। তার মধ্যে দুইজন আটক, একজন পলাতক।
তিনি বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগের বিচার হয়েছে। আশা করছি তাদের সর্বোচ্চ সাজা হবে।’
মামলার তিন আসামি হলেন, নওগাঁর রেজাউল করিম মন্টু, নজরুল ইসলাম ও শহিদ মণ্ডল। তাদের বয়স ৬২ থেকে ৬৪ বছরের মধ্যে। এদের মধ্যে নজরুল ইসলাম পলাতক।
২০১৬ সালের ১৮ অক্টোবর মামলার তদন্ত শুরু হয়। এক বছর ধরে চলা তদন্তে ৩১ সাক্ষীর সাক্ষ্য নেয়া হয়।
আসামি শহিদ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয় ২০১৭ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি।
রেজাউল করিম মন্টু বর্তমান জয়পুরহাট সদরের বাসিন্দা। জেলা শহরের প্রফেসর পাড়ার রাজাকার বিল্ডিং নামে পরিচিত বাসায় থাকতেন।
পলাতক নজরুল ইসলাম ঢাকায় তেজগাঁওয়ে থাকেন। শহিদ মণ্ডলের বাড়ি নওগাঁর বদলগাছী থানার চাঁপাডাল গ্রামে।
আসামিদের বিরুদ্ধে আনা তিন অভিযোগ
অভিযোগ-১: এ অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ৭ অক্টোবর বিকেল আনুমানিক ৪টা থেকে রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত আসামিরা নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের রানাহার গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের নিরীহ-নিরস্ত্র সাহেব আলী, আকাম উদ্দিন, আজিম উদ্দিন মণ্ডল, মোজাফফর হোসেনকে হত্যাসহ ওই সময় ১০-১২টি বাড়ি লুট করে আগুন ধরিয়ে দেয়।
অভিযোগ-২: ১৯৭১ সালের ৮ অক্টোবর দুপুর আনুমানিক দেড়টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত আসামিরা নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের খোজাগাড়ী গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের নিরীহ-নিরস্ত্র নুরুল ইসলামকে হত্যা করে। এ সময় তারা ১৫-২০টি বাড়ি লুটের পর আগুন ধরিয়ে দেয়।
অভিযোগ-৩: ১৯৭১ সালের ৮ অক্টোবর বিকেল আনুমানিক ৫টা থেকে পরদিন অর্থাৎ ৯ অক্টোবর আনুমানিক বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময়ে নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের মালঞ্চা গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের কেনার উদ্দিন এবং আক্কাস আলীকে আটক করে নির্যাতন করে। পরে অপহরণ করে জয়পুরহাটের কুঠিবাড়ি ব্রিজে নিয়ে হত্যা করে। এ সময়ের মধ্যে আসামিরা ৪০-৫০টি বাড়ি লুণ্ঠনের পর অগ্নিসংযোগ করে।