রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে মাঝেমধ্যেই আওয়ামী লীগকে সরিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে বিএনপি নেতারা যে বক্তব্য দেন, তার প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, ‘ক্ষমতায় থাকতে দেয়া না দেয়ার বিএনপি কে? ক্ষমতা দেয়ার মালিক মহান আল্লাহপাক এবং ক্ষমতার উৎস এ দেশের জনগণ। যতদিন জনগণ চাইবে, ততদিন শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকবে।’
রোববার রাজধানীতে তার বাসভবনে অনলাইন ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি নেতারা এবং তাদের জঙ্গিরা প্রেস ক্লাবের সামনের অংশে প্রতিদিনই সভা-সমাবেশ করছেন। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে তারা বক্তব্য- বিবৃতি দিয়ে বেড়াচ্ছেন। যা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশের মতো কর্মসূচি ভয়াবহ যানজট তৈরি করছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে অপরাজনীতির ঐতিহ্য বহন করছে দলটি। সে কারণেই তাদের বক্তব্য-বিবৃতিতে কোনো শালীনতা, সৌজন্যবোধও লক্ষ করা যায় না।
‘শেখ হাসিনাকে নিয়ে অশ্রাব্য ভাষায় স্লোগান ও গালিগালাজ করছে বিএনপি। ১৫ আগস্টের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার- এমন স্লোগান দিচ্ছে। আসলে বিএনপি নেতাদের এমন স্লোগান তাদের ঘাতক চরিত্রের পরিচয় আবারও স্পষ্ট করেছে।’
নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের সমালোচনায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বেচ্ছাচারী ও দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যকে মেনে নেয় না। কোনো ষড়যন্ত্রকারীর রক্তচক্ষু ও ত্রাসের কাছে মাথা নত করে না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার বুটের তলায় পিষ্ট করে কারফিউ মার্কা গণতন্ত্র চাপিয়ে দিয়ে জাতির সঙ্গে তামাশা করেছিলেন। একই সঙ্গে সেনাপ্রধান এবং রাষ্ট্রপতির পদ দখল করে সংবিধান ও আইনকে ভূলুন্ঠিত করেছিলেন।
‘তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে সে অপরাজনীতির ঐতিহ্য বহন করে চলেছে আজকের বিএনপি। যার ধারাবাহিকতায় কোনো আইন বা নিয়মনীতির কথা শুনলেই বিএনপি নেতাদের গায়ে জ্বালা ধরে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, আর এ নির্বাচন কমিশনের অধীনেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সরকারের অধীনে নয়। শেখ হাসিনা সরকার শুধু নির্বাচন পরিচালনায় নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেবে। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও সংবিধান অনুযায়ী সেভাবেই যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা কখনো বলে জাতীয় সরকার, কখনও তত্ত্বাবধায়ক, আবার কখনো বলে নিরপেক্ষ সরকার। দেখতে দেখতে এক যুগেরও বেশি সময় পার করলেন বিএনপি নেতারা। কিন্তু তারা এখনো জনগণের কাছে স্পষ্ট করতে পারেনি আসলে বিএনপি কী চায়।’
বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এটা তো মীমাংসিত একটি বিষয়। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এখন জাদুঘরে।
‘বিএনপির নেত্রীই তো বলেছিলেন, শিশু আর পাগল ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়। তবে কি ক্ষমতাপাগল বিএনপি কোনো শিশু আর পাগলের অধীনে নির্বাচন চায়, সেটাই প্রশ্ন।’