বর্ণাঢ্য আয়োজনে সিলেট ও রংপুরে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস পালিত হয়েছে।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে রোববার সকাল থেকেই জেলা দুটিতে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সিলেট
সেনানিবাসে নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চত্বরে সকালে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ১৭ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও সিলেট এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল হামিদুল হক।
তিনি বলেন, ‘১৯৮৮ সালের আগস্ট মাসে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক শান্তি প্রয়াসের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। বর্তমানে বিশ্বের ১৮টি দেশে ৬৮২৫ জন সামরিক ও পুলিশ সদস্য শান্তি রক্ষার কাজে নিয়োজিত আছেন।
‘বিশ্ব শান্তি রক্ষার কাজে এখন পর্যন্ত ১৬১ জন সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন ২৫২ জন। এ ধারাবাহিকতায় বিশ্ব শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের সেনা, নৌ, বিমান ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা সব সময় প্রস্তুত।’
মেজর জেনারেল হামিদুল হক বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শিতা ও প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বিশ্ব শান্তিরক্ষায় আমাদের অবদান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে বিশ্বে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর ক্ষেত্রে সর্ববৃহৎ বাহিনী আমাদের।
‘একই সঙ্গে সম্প্রতি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনের সদরদপ্তরে উচ্চ পর্যায়ের অফিসারদের অন্তর্ভুক্তিও আমাদের জন্য আশাব্যঞ্জক ও গৌরবের। সেনা, নৌ, বিমান ও পুলিশ বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনী বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য সব সময় প্রস্তুত। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশের সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মুহাম্মদ মফিজ উদ্দিনসহ, পদস্থ অসামরিক কর্মকর্তা, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, স্থানীয় ইউএনসহ অন্যান্য সংস্থার সদস্যরা এবং জাতিসংঘের স্থানীয় কর্মকর্তারা।
বক্তব্য শেষে পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের শুভসূচনা করেন কর্মকর্তারা। পরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সেনানিবাস এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
রংপুর
আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে রংপুর সেনানিবাসে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে সঙ্গে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের শুরু করেন ৬৬ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মো. ফয়জুর রহমান।
এ সময় রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওয়াহাব ভুঞা, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আব্দুল আলীম মাহমুদ, জেলা প্রশাসক আসিব আহসান ও পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ফরমেশনের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ফয়জুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ সেনাসদস্য প্রেরণকারী দেশ হিসেবে শান্তিরক্ষা মিশনে অবদান রাখছে। এর ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি শান্তিরক্ষী মিশনের সদরদপ্তরে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা দেশ থেকে নিয়োগ পেয়েছেন।’
অনুষ্ঠানে শান্তিরক্ষীদের মহান আত্মত্যাগের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়।
বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের সদস্যদের ভূমিকা ও আত্মত্যাগ স্মরণীয় করতে ২৯ মে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা দিবস পালন করা হয়। বাংলাদেশ ১৯৮৮ সালের আগস্ট মাস থেকে আন্তর্জাতিক শান্তির এ প্রয়াসের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়।