বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জামালপুরে লিচুর ফলনে বিপর্যয়

  •    
  • ২৯ মে, ২০২২ ১০:৫১

‘দেড় লাখ টাকা দিয়ে বাগান কিনে নিছিলাম। এরপর ৫০ হাজার টাকার সার, বিষ আর পানি দিছি। লিচুর যে ফলন আইছে তাতে আমার ১ লাখ ২০ হাজার টাকা আসে কি না সন্দেহ আছে। এইবার খুব লস। আমি ২৪ বছর ধইরে লিচুর ব্যবসা করি। এমন ক্ষতি এর আগে কখনও হয় নাই।’

জামালপুরের চায়না থ্রি, বোম্বাই, এলাচি ও মোজাফফরপুরী জাতের লিচুর বেশ কদর আশপাশের জেলাগুলোতে।

জেলায় সবচেয়ে বেশি লিচুর আবাদ হয় সদরের শরিফপুর, শ্রীরামপুর ও শাহবাজপুরে। অন্যান্য জাতের চেয়ে চায়না থ্রির চাহিদা ও দাম বেশি থাকায় এসব এলাকায় এ লিচুর আবাদ বেশি করেন চাষিরা।

তবে এবারের চিত্র ভিন্ন। বৈরী আবহাওয়ার কারণে এবার লিচুর ফলন কম হয়েছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বাগানি ও ব্যবসায়ীরা।

জামালপুর সদর উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের মহেশপুর কালিবাড়ী ঘুন্টি এলাকার ১০০ গাছের লিচুর বাগান কিনেছেন ব্যবসায়ী মো. আলম। তিনি বলেন, ‘বাবা, আমি ২৪ বছর ধইরে লিচুর ব্যবসা করি। এইবার যে ক্ষতি হইছে, ১৫ বছরের মধ্যে এবার ঠাডা পরে নাই। এইবার আঙ্গর (আমার) সব নুকসান (ক্ষতি)।

‘দেড় লাখ টাকা দিয়ে বাগান কিনে নিছিলাম। এরপর ৫০ হাজার টাকার সার, বিষ আর পানি দিছি। লিচুর যে ফলন আইসে তাতে আমার ১ লাখ ২০ হাজার টাকা আসে কি না সন্দেহ আছে। এইবার খুব লস। আমি ২৪ বছর ধইরে লিচুর ব্যবসা করি। এমন ক্ষতি এর আগে কখনো হয় নাই।’

শুধু আলম নন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে লিচুর ফলন কম হওয়ায় জামালপুরের প্রায় সব ব্যবসায়ী ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

জামালপুর সদরের শাহবাজপুর এলাকায় ১২ বিঘা জমির ওপর চায়না থ্রি জাতের লিচুর আবাদ করেছেন ডা. আলম। শনিবার সকালে তার বাগানে গিয়ে দেখা যায়, গাছ আর পাতা ছাড়া অন্য কিছু চোখে পড়ছে না।

আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গাছে মুকুল আসার সময় তীব্র দাবদাহ ছিল, তাই সব মুকুল পুড়ে গেছে। এ ছাড়া ফলন আসার আগমুহূর্তে অতিবৃষ্টি হওয়ায় ঝরে গেছে অনেক লিচু। এ বছর অনেক বিষ, সার দেয়া হয়েছে। এর সবকিছুই এবার লস।

‘শুধু আমার বাগানের না। এই এলাকায় সব বাগানে চায়না থ্রি জাতের লিচুর একই অবস্থা। শুধু দেশি জাতের কিছু লিচু টিকছে। বাকিগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।’

জামালপুর সদর উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের মহেশপুর কালিবাড়ী ঘুন্টি এলাকার কয়েকটি বাগানে গিয়ে দেখা যায়, গাছ থেকে লিচু পারতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বাগানিরা।

তাদেরই একজন মিন্টু মিয়া। তার বাগানে ১০০ লিচুগাছে এবার অন্যান্য জাতের কিছুটা ফলন হলেও চায়না থ্রি জাতের লিচুর ফলন সবচেয়ে কম হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘১০ বছর ধইরে এই বাগান আমি দেখাশোনা করি। প্রচুর রোদ আর বৃষ্টির কারণে এবার যে ক্ষতি হয়েছে, এর আগে কখনো এমন হয় নাই।’

লিচু ব্যবসায়ী মো. রমজান বলেন, ‘এই অঞ্চলের লিচু রসালো হওয়ায় চাহিদা অনেক বেশি। তবে ফলন কম হওয়ায় চাহিদার তুলনায় সরবরাহ খুবই কম। তাই কিছুটা বেশি দামে লিচু বিক্রি করতে হচ্ছে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক কৃষিবিদ জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘লিচুর ফলন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাগান মালিকদের সঠিক সময়ে পরামর্শ ও সহায়তা দেয়া হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে এবার লিচুতে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে বাজারমূল্য ভালো পেলে লাভবান হতে পারেন কৃষকরা।’

এ বিভাগের আরো খবর