বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ছাদবাগান করে মনিরা পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার

  •    
  • ২৮ মে, ২০২২ ২২:৪৩

২০১৪ সালে শখের বশে অল্প কিছু গাছ এনে ছাদে লাগিয়েছিলেন মনিরা। এরপর হঠাৎ চিন্তায় আসে কীভাবে এটিকে উৎপাদনমুখী ও বাণিজ্যক করা যায়। সেই চিন্তা থেকেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন জাতের ওষুধি গাছ, সবজি, নানা ধরনের ফল ও ফুলের গাছ আমদানি করেন।

‘বাড়ির ছাদে বাগান সৃজন’ ক্যাটাগরিতে প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার পাচ্ছেন গাজীপুরের মনিরা সুলতানা মুনমুন। তিনি আমেরিকা ফেরত নারী। এই ক্যাটাগরিতে এ বছর তিনি প্রথম হয়েছেন।

পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা দীপঙ্কর বরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গত ২৪ মে পুরস্কার পাওয়ার তথ্য জানানো হয়।

প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কারের জন্য এ বছর ৭ ব্যক্তি ও ১৬টি প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করেছে সরকার। ১৯৯৩ সাল থেকে চালু হওয়া প্রতিটি শ্রেণির পুরস্কার প্রাপ্তদের সনদপত্র এবং অর্থ দেয়া হয়।

মনিরা সুলতানা শ্রীপুরের প্রহলাদপুর ইউনিয়নের দমদমা গ্ৰামের ব্যবসায়ী আকরাম হোসেন বাঁদশার স্ত্রী।

গাজীপুরের উত্তর ছায়াবিথী এলাকায় মনিরা নিজ বাড়ির ছাদে গড়ে তুলেছেন দেশি, বিদেশি উদ্ভিদের বিশাল সমারোহ। এ কাজে তাকে উৎসাহ ও সার্বিক সহযোগিতা করেছেন স্বামী আকরাম হোসেন।

কীভাবে শুরু

২০১৪ সালে শখের বশে অল্প কিছু গাছ এনে ছাদে লাগিয়েছিলেন মনিরা। এরপর হঠাৎ চিন্তায় আসে কীভাবে এটিকে উৎপাদনমুখী ও বাণিজ্যক করা যায়। সেই চিন্তা থেকেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন জাতের ওষুধি গাছ, সবজি, নানা ধরনের ফল ও ফুলের গাছ আমদানি করেন। স্বামী আকরাম হোসেন যতবার বিভিন্ন দেশে গেছেন, ততবার তার জন্য নিয়ে এসেছেন কোনো না কোনো উদ্ভিদ।

মনিরা জানান, ছাদটি পরিপূর্ণভাবে সাজিয়ে সেখান থেকে কিছু চারা বিক্রি করেছেন। এর পরেই মাথায় আসে আরও বড় পরিসরে ছাদে বিভিন্ন ওষুধি গাছ ও ফলমূলের চারা উৎপাদন করবেন। একই সঙ্গে চারা উৎপাদন, ছাদ কৃষিতে উদ্ভিদের পরিচর্যা ও অল্প জায়গায় সর্বোত্তম ব্যবহার নিয়ে লোকজনকে প্রশিক্ষণ দেবেন।

তার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ফেসবুকে ‘প্লান্টস ফ্রম মুন’ নামের একটি গ্রুপ খুলেন। সেই গ্রুপের সদস্য হন অসংখ্য মানুষ। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজন তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে লাগলেন।

শুধু ছাদ বাগানই নয়, তিনি ছাদে মাছও চাষ করছেন। মাছ পালনের পানির হাউজ থেকে ফাইটোপ্লাংকটন মিশ্রিত পানি দেয়া হয় গাছের গোড়ায়। এতে গাছ অনেক পুষ্টি পায়।

এ ছাড়া বাড়িতে উৎপাদিত সবজির উচ্ছিষ্টাংশ বিশেষ পদ্ধতিতে জৈব সারের রূপান্তর করেন। এসব সার বাজারে পাওয়া যেকোনো সারের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ বলে জানান মনিরা। অর্গানিক সবজি উৎপাদনের জন্য তিনি এগুলো গাছকে খাবার হিসেবে দেন।

কী ধরনের গাছ রয়েছে

মনিরার ছাদ বাগানে সব মিলিয়ে উদ্ভিদের সংখ্যা ১ হাজার ৪৩৯টি। এর মধ্যে ওষুধি গাছ আছে ৪০ প্রজাতির। শোভাবর্ধন করা গাছ আছে ৫৬ প্রজাতির। বিশেষ প্রজাতির গাছের সংখ্যা ২৬টি। দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির গাছ আছে ৭ প্রজাতির। ফলজ গাছের সংখ্যা ৯৯টি। অন্যান্য অন্তত ১০০ প্রজাতির গাছ আছে তার ছাদে।

ওষুধি গাছের মধ্যে আছে অর্জুন, আমলকি, বহেরা, হরিতকী, ঘৃতকুমারী, নিম, তুলসি, থানকুনি, বাসক, পেইন কিলার, অ্যাড্রেসিয়া বেরি, ক্লিন স্টোমাক, চেইন অফ গ্লোরি, রুইলিয়া রেসিলিয়া, ডেইজি, কিডনি প্লান্ট, ভ্যানিলা অর্কিড, কর্পূর, জয়ত্রী, গোলমরিচ, সুইট রেসিন, ট্রি রেসিন, কারি পাতা প্রভৃতি।

সবজির মধ্যে আছে লেটুস, করলা, ধনেপাতা, বেগুন, কাকরোল, পটল, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া, লাউ, লাল ঢেরস, সিম, শসা, টমেটো, মরিচসহ আরো বিভিন্ন প্রজাতি।

দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় জাতের মধ্যে আছে ওল্ড চন্ডাল, আগর, সিভিট, হলদু, কৃষ্ণ বট, অশোক, কর্পূর প্রভৃতি।

প্রথম পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে মনিরা বলেন, ‘ছাদ কৃষিতে অনেক উদ্যোক্তা তৈরি করতে চাই। তাই প্রতি বছর প্রশিক্ষণ, চারা ও বীজ বিতরণসহ সেমিনার করি। আশা করি, আগামীতে কৃষিতে আমরা আরও ভালো করব।’

এ বিভাগের আরো খবর