যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইন্দো প্যাসিফিক ইকোনোমিক ফ্রেমওয়ার্ক বা আইপিইএফ নামে যে নতুন অর্থনৈতিক জোট গঠন করা হয়েছে তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।
শনিবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই জোটকে ‘দূরভিসন্ধিমূলক’ বলে মন্তব্য করেছেন সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ্ আলম এবং সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন।
তারা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরসহ এশিয়ার ১৩ দেশ নিয়ে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ যে নয়া জোট গঠন করেছে তা স্পষ্টতই দূরভিসন্ধিমূলক। সবচেয়ে উদ্বেগের কথা হলো, বাংলাদেশকে এই জোটে যুক্ত করতে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।’
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, ‘জাপান সফরকালে এই জোটের ঘোষণা দিতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাদের মন্দ অভিপ্রায় অনেকটাই প্রকাশ করে ফেলেছেন। সেটি হলো, এশিয়ার বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ আধিপত্য এবং সেটি উৎপাদনের জোরে নয়, বরং তদারকি ক্ষমতার জোরে।
‘শুরুতেই এই জোটের আলোচনায় সারা দুনিয়ার অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তি চীনকে বাইরে রাখা হয়েছে। বাদ দেয়া হয়েছে আসিয়ানের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য রাষ্ট্র কাম্বোডিয়া, লাওস, মিয়ানমারকে। এ জোটের ঘোষণায় আরও বলা হয়েছে, তারা জোটভুক্ত দেশগুলোর সাপ্লাই চেইন, জ্বালানি খাত, বাণিজ্য কর, শ্রম আইন ইত্যাদি বিষয়ে তদারকিমূলক ভূমিকা রাখবে। ফলে বেশ পরিষ্কারভাবেই বোঝা যাচ্ছে যে, জোটের সদস্য রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে কার কর্তৃত্ব প্রধান হবে।’
তারা আরও বলেন, ‘শুধু তাই নয়, বাণিজ্য জোটের নামে এটি আসলে এক ধরনের রাজনৈতিক জোট। যার লক্ষ্য হলো, ইউক্রেন যুদ্ধের নয়া প্রেক্ষাপটে চীন এবং রাশিয়ার বিপরীতে তাদের নিজস্ব শক্তিবলয় গড়ে তোলা। একই সঙ্গে এশিয়ায় ন্যাটোর দীর্ঘমেয়াদী উপস্থিতির প্রেক্ষাপট শক্তিশালী করা এবং একপর্যায়ে চীনের বেল্ট এন্ড রোড প্রকল্পকে বিঘ্নিত করা। যা নিশ্চিতভাবেই এশিয়ায় বিরাট সংঘাতের জন্ম দেবে।’
বাংলাদেশ সরকারকে এই জোটে শরিক না হয়ে দূরত্বে থাকার দাবি জানিয়ে সিপিবি বিবৃতিতে বলে, এশিয়ার জনগণ কোনোভাবেই এই সংঘাতময় পরিস্থিতিকে স্বাগত জানাতে পারে না।
তাই, অবিলম্বে এই (আইপিইএফ) জোট প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি জানায় দলটি। সে সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারকে কোনোভাবেই এই জোটে শরিক না হওয়া এবং এর থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকারও দাবি জানায় দলটি।