একুশে গানের রচয়িতা, বরেণ্য লেখক ও সাংবাদিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীকে শেষ শ্রদ্ধা জানালেন বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন ও নেতারা।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে শনিবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তার মরদেহ নিয়ে আসা হয়। এরপরই হয় জানাজা।
এর আগে জাতীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য রাখা হয়েছিল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ। সেখানে তারই রচিত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটি গেয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
জানাজার আগে তার স্মরণে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘বাঙালি যতদিন থাকবে, বাংলা ভাষা যতদিন থাকবে, ততদিন গাফ্ফার চৌধুরী থাকবেন। সাংবাদিক সমাজের অপূরণীয় ক্ষতি হলো, এই ক্ষতি আর কোনো দিন পূরণ হবে না।
‘তাকে সবাই শ্রদ্ধা করেন, ভালোবাসেন। সাংবাদিক সমাজ তাকে গভীরভাবে ভালোবাসেন।’
২৮ জুন প্রেস ক্লাবে গাফ্ফার চৌধুরীর স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানানো হয়।
জানাজা শেষে বেলা ৪টায় শুরু হয় শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব। প্রথমেই শ্রদ্ধা জানায় জাতীয় প্রেস ক্লাব, এরপর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং। তারপর একে একে শ্রদ্ধা জানায় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, এডিটরস গিল্ড, ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন ও গণমাধ্যম।
বেলা সাড়ে ৪টার দিকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের উদ্দেশে গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ প্রেস ক্লাব থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে স্ত্রীর কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
যুক্তরাজ্য থেকে বেলা ১১টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহবাহী কফিন পৌঁছায়।
গত ১৯ মে লন্ডনের একটি হাসপাতালে মারা যান ৮৮ বছর বয়সী গাফ্ফার চৌধুরী। তিনি কয়েক মাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে নিবন্ধিত স্বাধীন বাংলার প্রথম পত্রিকা ‘সাপ্তাহিক জয় বাংলা’র প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। বরিশালের উলানিয়ার চৌধুরী বাড়িতে তার জন্ম ১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর।
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী উলানিয়া জুনিয়র মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে হাইস্কুলে ভর্তি হন। ১৯৫০ সালে ম্যাট্রিক পাস করে ভর্তি হন ঢাকা কলেজে।
১৯৫৩ সালে তিনি ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৮ সালে বিএ অনার্স পাস করেন গাফ্ফার চৌধুরী।