অনলাইনে ক্লাস করার জন্য অভিভাবকরা একটি ফোন কিনে দিয়েছিলেন। আর তা চালাতে চালাতে একসময় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সঙ্গে ‘জড়িয়ে যায়’ অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী। ফেসবুকের একাধিক আইডি, অ্যাপস ও চ্যানেলের মাধ্যমে চালায় উগ্রবাদ তৎপরতা। অবশেষে তা র্যাবের গোয়েন্দাদের নজরে আসে।
শুক্রবার ভোরে র্যাব-৩-এর সদস্যরা মেয়েটিকে নেত্রকোণার চল্লিশা ইউনিয়নের একটি বাড়ি থেকে আটক করে। পরে ওইদিন রাতেই তাকে নেত্রকোণা মডেল থানায় দেয়া হয়।
র্যাব-৩-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস ও নেত্রকোণা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ধারায় মামলা হয়েছে। শনিবার বিকেলের মধ্যে তাকে আদালতে তোলা হবে।
গ্রেপ্তার মেয়েটির আনুমানিক ১৭ বছর। তার বাবা ও ভাই ছোট কৃষক।
ওসি খন্দকার শাকের আহমেদ জানান, মেয়েটি নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের একজন সদস্য। তার একাধিক ফেসবুক আইডি রয়েছে। এসব আইডি থেকে সহযোগীদের সঙ্গে রাষ্ট্রবিরোধী ও জঙ্গিবাদী বিভিন্ন বার্তা এবং ভিডিও আদান-প্রদান করত। র্যাব সদস্যদের সংগ্রহ করা ১২৬ পৃষ্ঠা কাগজে তার এ ধরনের বার্তা-আদান প্রদানের প্রমাণ রয়েছে। তাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও আপত্তিকর এবং উসকানিমূলক বার্তা উল্লেখ আছে। ফেসবুকে তার ১ হাজার ৩৬০ জন বন্ধু ছাড়াও অনেক ফলোয়ার রয়েছে।
র্যাব-৩-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস বলেন, ‘টেলিগ্রাম অ্যাপসে শারমিনের ৫টি চ্যানেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। এগুলোর মাধ্যম সে নিষিদ্ধ আনসার আল ইসলামের মতাদর্শ প্রচার করত। এর আগে যশোর থেকে গ্রেপ্তার হওয়া একই সংগঠনের আরেক সদস্যের সঙ্গেও তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।’
ওসি জানান, র্যাব সদস্যরা আগে থেকেই তার বিষয়ে গোয়েন্দা নজরদারি ও অনুসন্ধান চালিয়ে আসছিল। শুক্রবার ভোরে তাকে আটক করে পরে থানায় সোপর্দ করে। র্যাব-৩-এর ডিএডি ইখতিয়ার হোসেন বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে তার নামে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেছেন। তাকে আদালতে তুলে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
মেয়েটির বাবা বলেন, ‘আমরা করোনা পরিস্থিতির সময় মোবাইলে ক্লাশ করার জন্য তাকে একটা মোবাইল ফোন কিনে দিয়েছিলাম। কিন্তু কখন যে এ কাজে জড়িয়ে গেছে তা বুঝতে পারিনি।’
তিনি দাবি করেন, ‘আমার মেয়েটির বয়স খুব অল্প। হয়তো তাকে কেউ বিভ্রান্ত করেছে।’