পাহাড়ে কিছু গোষ্ঠী সাধারণ মানুষকে অত্যাচার-নির্যাতন করছে বলে মন্তব্য করেছেন সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীন। তিনি বলেন, তারা যুদ্ধের নামে সন্ত্রাস করছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাঙ্গামাটির শহরের সুখী নীলগঞ্জ পুলিশ লাইনসে ডিআইজি আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নস (পার্বত্য জেলাসূমহ) ও তিন পার্বত্য জেলায় তিনটি আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘আপনারা পাহাড়ে-পাহাড়ে লুকিয়ে থাকবেন, মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে অত্যাচার করবেন, খাবার খাবেন, রাতের বেলায় এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে পালিয়ে থাকবেন, তারপর দূর থেকে আমাদের গুলি করে আহত করবেন, এ তো কোনো যুদ্ধ হলো না। এটা সন্ত্রাসী কার্যক্রম।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আক্তার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, রাঙ্গামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, চাকমা সার্কেল চিফ দেবাশীষ রায়সহ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী।
এ সময় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ।
পাহাড়ে সশস্ত্রগোষ্ঠীদের উদ্দেশে মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীন বলেন, ‘এ এলাকা দুর্গম বলে আপনারা সুবিধা পাচ্ছেন, এলাকার সুবিধা আপনারা নিচ্ছেন। আজ যদি বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার মতো হতো তাহলে আমাদের প্রয়োজন হতো না। যেকোনো বাহিনী, এমনকি আনসার বাহিনী আপনাদের শায়েস্তা করে দিতে পারত।’
পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে ১৯৯৮ সালে করা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে সব পক্ষকে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানান এই সেনা কর্মকর্তা। বলেন, ‘পার্বত্য শান্তিচুক্তির যে কয়টি ধারা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি, সেটি বাস্তবায়নের আগে যারা অস্ত্রধারী আছেন তারা আপনাদের মাত্র দুটি ধারা বাস্তবায়ন করেন। অস্ত্র সমর্পণ করেন এবং নিজেদের আমাদের হাতে তুলে দেন।
‘আর না হলে যেকোনো মূল্যে আমরা সবাই আপনাদের বিরুদ্ধে যেকোনো রকম আত্মদান প্রয়োজন, তা করতে প্রস্তুত আছি। আমরা আত্মদান করেছি, এখানে রক্ত দিয়েছি, আরও রক্ত দেব। কিন্তু আপনাদের হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে সফল হতে দেব না।’
রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান, পুলিশ সুপার মীর মোদদাছছের হোসেন, তিন পার্বত্য জেলার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য, হেডম্যান-কারবারিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।