পদ্মায় প্রবল স্রোতের কারণে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ফেরি চলাচল আজও বন্ধ রয়েছে। এতে এই পথে তিন শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকেই এ নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ আছে। এর পরিবর্তে শিমুলিয়া-মাঝিকান্দি নৌরুটে ফেরি চলছে।
শুরক্রবার শিমুলিয়া ঘাটে পারের অপেক্ষায় থেকে ভোগান্তির কথা জানিয়েছেন চালক-যাত্রীরা।
যাত্রী আমেনা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাত ১১টায় আসছি, এখন সকাল ১১টা বাজে। বাচ্চা নিয়া বইসা আছি, কখন ফেরিতে উঠব বুঝতে পারতেছি না।’
পারের অপেক্ষায় থাকা একটি যাত্রীবাহী পিকআপের চালক মোহাম্মদ জাফর মিয়া বলেন, ‘শরীয়তপুর যাব। রাত ১১টা বাজে আসছি, এখনও ফেরিতে উঠতে পারিনি। কিছু বললেই পুলিশ গাড়ির চাবি নিয়ে যায়। বলে আরিচা ঘাট দিয়ে যাও। আমাদের পড়ে অনেক গাড়ি চলে যাচ্ছে কিভাবে?’
পিকআপের যাত্রী ঝর্ণা আক্তার বলেন, ‘পিকআপে করে যাচ্ছি। সঙ্গে ঘরের মালামাল আছে। সকাল ৮টায় ঘাটে আসছি, এখন দুপুর ১২টা বাজে। ফেরিতে উঠতে পারিনি।’
আরেক চালক শক্তি উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘এই ঘাটে কোনও নিয়ম নাই, সব অনিয়মে চলে। এসি গাড়ির ভিতর বইসা দুই হাজার টাকা ঘুষ দেয়ার সামর্থ্য আছে, আমার ৫০০ টাকা দেয়ার সামর্থ্য নাই। তাই অনেকক্ষণ বসে থাকলেও ফেরিতে উঠতে পারি না।’
এ বিষয়ে জানতে ফোন দেয়া হলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক জামাল হোসেন বলেন, ‘আমি মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে জাহাজে আছি। আপনারা ফয়সাল সাহেবকে ফোন দেন।’
শিমুলিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথের ফেরিগুলো পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে চলাচল করে। এই নৌরুটে এখনও তীব্র স্রোত রয়েছে। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে।
‘শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় তিন শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। ৭টি ফেরি দিয়ে যানযাহন পার করা হয়েছে।’
মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের টিআই জিয়াউল হায়দারের মোবাইলে ফোন দেয়া হলেও তা রিসিভ করেননি তিনি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) উপপরিচালক ওবায়দুল করিম বৃহস্পতিবার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্রোতের কারণে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটের চ্যানেলের বয়াগুলো ভেসে গেছে। তবে নারায়ণগঞ্জ থেকে বয়া এলেই আমরা তা স্থাপন করব। বয়া স্থাপনের পরে আগের মতো শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে আবারও ফেরি চলাচল শুরু হবে।’