অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকায় ভারত ও বাংলাদেশের আদালতে প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) বিচার হবে বলে জানিয়েছেন দুদক কমিশনার ড. মোজাম্মেল হক খান।
ভারতে গ্রেপ্তার হওয়া পি কে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সর্বাত্মক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে বলেও জানান দুর্নীতি দমন কমিশনের এ কর্মকর্তা।
মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা এলাকায় শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে মোজাম্মেল হক খান কলেজে দুর্নীতিবিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
দুদক কমিশনার বলেন, ‘পি কে হালদার বাংলাদেশের নাগরিক, দেশের অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত। তার সহযোগীদের নামেও ৩৫টি মামলা হয়েছে। তারা অর্থ পাচারের বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
‘পি কে হালদারকে দেশে এনে আদালতের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারলে আরও অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। এসব তথ্য মামলা নিষ্পত্তি করতে সহায়তা করবে।’
দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া দুদকের মূল কাজ উল্লেখ করে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘অর্থ পাচারের অভিযোগ আসলেই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের নামের তালিকা করা হচ্ছে। তালিকা ও তথ্য আপডেট করা হচ্ছে প্রতি মুহূর্তে। একই সঙ্গে পাচারের টাকা ফিরিয়ে আনতে ও পালিয়ে যাওয়া অপরাধীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন দুদকের মহাপরিচালক এ কে এম সোহেল, ঢাকা বিভাগের পরিচালক আক্তার হোসেন, ন্যাশনাল ডিবেট ফেডারেশনের চেয়ারম্যান এ কে এম শোয়েব, মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন, মাদারীপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রীনিবাস, দুদকের মাদারীপুরের উপপরিচালক আতিকুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাইন উদ্দিনসহ অনেকে।
এর আগে ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আর্থিক জালিয়াতি সংঘটনে ‘বহুমুখী প্রতিভার’ পরিচয় দেয়া পি কে হালদারসহ ছয়জনকে। ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হেফাজতে থাকা পি কেকে দুই মেয়াদ রিমান্ড শেষে শুক্রবার আবার কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্টের সিবিআই আদালতে নেয়ার কথা রয়েছে।
গ্রেপ্তারের সময় পি কে হালদারের কাছ থেকে ভারতের নাগরিকত্ব, আধার কার্ডসহ বেশ কিছু নথি জব্দ করে ইডি।
নানা কৌশলে নামে-বেনামে একের পর এক কোম্পানি খুলে, প্রভাব খাটিয়ে প্রতারণা ও জালিয়াতি করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ধসিয়ে দিয়েছেন পি কে হালদার।
ঋণের নামে টাকা লোপাট, নামে-বেনামে পুঁজিবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনার অভিযোগ রয়েছে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের সাবেক এই ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে।
পি কে হালদার ২০০৮ সাল পর্যন্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইআইডিএফসিতে উপব্যবস্থাপনা (ডিএমডি) পরিচালক ছিলেন। ২০০৯ সালে তিনি রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের এমডি হয়ে যান। এরপর ২০১৫ সালের জুলাইয়ে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকে এমডি পদে যোগ দেন।