বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পুলিশ বক্সে দোকানির সংসার

  •    
  • ২৭ মে, ২০২২ ০১:২৭

মুদি দোকানি বিল্লা ভান্ডারী বলেন, ‘পুলিশ বক্সে পুলিশ থাকে না। আমি সারাদিন পাশে দোকান করি, রাত হলে পরিবার নিয়ে বক্সে থাকি। বাড়ি গেলে দোকানে চুরি হওয়ার ভয়ে এখানেই ঘুমাই।’

সড়ক ও বসতির নিরাপত্তা জোরদারে নির্মাণ করা হয়েছে পুলিশ বক্স ও চেকপোস্ট। কিন্তু সেখানে নেই পুলিশ। বছরের পর বছর ফাঁকা পড়ে থাকা এসব ঘর এখন অন্যের দখলে। এমনকি রান্না-খাওয়া ও বসবাস করতে ব্যবহার হচ্ছে পুলিশ বক্স। এ চিত্র মানিকগঞ্জের।

সরেজমিনে দেখা যায়, ২০১৫ সালে নির্মাণ করা বরংগাইল-নাগরপুর মহাসড়কে ঘিওর পুলিশ বক্সে বসবাস শুরু করেছেন এক দোকানি। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে জাগীর পুলিশ বক্সে ঝুলছে তালা। ভেতরে বসার চেয়ার-টেবিলে ময়লার স্তূপ। একই অবস্থা কামতা পুলিশ চেকপোস্টের। পুলিশের দেখা নেই কতেদিন, তা বলতে পারে না লোকজন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সড়কে যানবাহন ও মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ২০১৫ সালে মানিকগঞ্জের মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কের পাশে নির্মাণ করা হয় বেশ কয়েকটি পুলিশ বক্স। প্রথম দিকে পুলিশ ডিউটি করলেও দীর্ঘদিন ধরেই সেসব অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। পুলিশ বক্সে থাকা চেয়ার-টেবিল, ফ্যান আর লাইটে বাসা বেঁধেছে মাকড়শা।

সাটুরিয়ায় কামতা পুলিশ চেকপোস্ট তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে দীর্ঘদিন। ছবি: নিউজবাংলা

চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই বেড়ে যাওয়ায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ও বরংগাইল-নাগরপুর এবং গোলড়া-সাটুরিয়া আঞ্চলিক সড়কের পাশে এসব পুলিশ বক্স নির্মাণ করা হয়। সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতায় নির্মাণ করা এসব পুলিশ বক্সে প্রায় দুই বছর ধরে পুলিশের দেখা মেলে না। তালা ঝুলছে এসব পুলিশ বক্সে। স্থানীয় থানা থেকে সেখানে ডিউটিতে পাঠানো হয় না পুলিশ সদস্যদের।

স্থানীয় বাসিন্দা ফরিদা আক্তার বলেন, ‘বিপদ তো বলে-কয়ে আসে না। রাস্তায় পুলিশের টহল থাকলে ভয় কম লাগে। কিন্তু পুলিশ বক্স এখানে ফাঁকা থাকে, না হলে তালা দেয়া থাকে।’

রিকশাচালক শুকুর আলী বলেন, ‘কামতা পুলিশ চেকপোস্টে আগে রাত ১১টা পর্যন্ত পুলিশ থাকত। এখন কেউ থাকে না। যদিও এখন ডাকাতি আগের মতো হয় না। রাস্তায় পুলিশ থাকলে যাতায়াতের সময় মনে সাহস থাকে।’

ব্যবসায়ী নিখিল রাজবংশী বলেন, ‘ব্যবসার জন্য অনেক সময় বরংগাইল বা শিবালয় থেকে রাতে ফিরতে হয়। পুলিশ বক্সে আগের মতো পুলিশ থাকলে ভয় কম পেতাম।’

রাতে ঘিওর পুলিশ বক্সে ঘুমান স্থানীয় মুদি দোকানি বিল্লা ভান্ডারী। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সেখানে তিনি রীতিমতো সংসার পেতে বসেছেন।

বিল্লা ভান্ডারী বলেন, ‘পুলিশ বক্সে পুলিশ থাকে না। মাঝে মাঝে পুলিশ টিম এলাকায় আসলেও রাস্তা দিয়ে চলে যায়। আমি সারাদিন পুলিশ বক্সের পাশে দোকান করি। রাত হলে পরিবার নিয়ে বক্সে থাকি। এখানে চোর-ডাকাতের ভয় আছে। বাড়ি গেলে যদি দোকানে চুরি হয়ে যায়, তাই পুলিশ বক্সে ঘুমাই।’

ঘিওর পুলিশ বক্সের ভেতরে মুদি দোকানি বিল্লা ভান্ডারীর সংসার। ছবি: নিউজবাংলা

নিরাপত্তা প্রশ্নে মানিকগঞ্জ শুভযাত্রা বাস মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মো.ইদ্রিস আলী বলেন, ‘পুলিশ বক্স বা চেকপোস্টে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ থাকা দরকার। তাহলে নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা কম থাকে। এসব সড়কে তখন যাতায়াত করতে কেউ ভয় পাবে না।’

পুলিশ বক্স ও চেকপোস্ট অব্যবহৃত থাকার বিষয়ে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ গোলাম আজাদ খান অবগত নন। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’

মানিকগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা বলেন, ‘আমাদের চেকপোস্ট ও পুলিশ বক্স রাখা হয়েছে নিরাপত্তার স্বার্থে। সেখানে পুলিশ থাকলে অপরাধীরা ভয় পাবে। চেকপোস্ট থাকলে অপরাধ কমে।’

এ বিভাগের আরো খবর